এসসিও শীর্ষবৈঠকে সন্ত্রাস নিয়ে মোদীর তোপ, শরীফের জবাব
৪ জুলাই ২০২৩এসসিও মানে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন৷ ভারত এবার এসসিওর চেয়ারম্যান৷ এই বৈঠক এবার বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছে বেশ কয়েকটি কারণে। ওয়াগনার বিদ্রোহের পর প্রথমবার এই ধরনের বৈঠকে যোগ দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন। বৈঠকে ছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং৷ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফও যোগ দিয়েছেন৷ বেলারুশ এতদিন পর্যবেক্ষক দেশ হিসাবে ছিল৷ এবার তারা এসসিও-র সদস্য হচ্ছে৷
আর মার্কিন সফরের পর নরেন্দ্র মোদী এবার এমন একটা বৈঠকের সভাপতিত্ব করছেন, যেখানে চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান, ইরান, কিরঘিজস্তান, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তানের শীর্ষনেতারা ছিলেন। এছাড়া পর্যবেক্ষক দেশ হিসাবে ইরান, বেলারুশ, মঙ্গোলিয়ার শীর্ষনেতারাও ছিলেন। সেই বৈঠকেই সন্ত্রাসবাদ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী ও শাহবাজ শরীফ নাম না করে একে অন্যকে আক্রমণ করলেন।
মোদী যা বললেন
প্রধানমন্ত্রী মোদী তার উদ্বোধনী ভাষণে বলেছেন, ‘‘এই বৈঠকের থিম হলো সিকিওর। এস মানে সিকিউরিটি বা সুরক্ষা, ই মানে ইকনমিক ডেভলাপমেন্ট বা আর্থিক উন্নয়ন, সি মানে কানেকটিভিটি বা যোগাযোগ, ইউ মানে ইউনিটি বা ঐক্য. আর হলো রেসপেক্ট বা সম্মান(এখানে সার্বভৌমত্বর প্রতি সম্মান) এবং ই-র অর্থ এনভায়রনমেন্ট বা পরিবেশ। বৈঠকের পাঁচ স্তম্ভ হলো স্টার্ট আপ, ঐতিহ্যবাহী ওষুধ, যুবদের ক্ষমতা দেয়া, সবাইকে ডিজিটাল ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসা এবং বৌদ্ধধর্মের ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দেয়া৷’’
পাকিস্তানের নাম না করে মোদী বলেছেন, ‘‘কিছু দেশ তো সীমান্তপারের সন্ত্রাসকে তাদের নীতি হিসাবে নেয়। এসসিও-র উচিত এই ধরনের দেশের সমালোচনা করা৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু দেশ সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয় দিচ্ছে। সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দিচ্ছে৷’’
শরীফের বক্তব্য
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফও সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, ''স্পষ্ট ও দ্বিধাহীনভাবে সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করতে হবে। কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদ বরদাস্ত করা যাবে না। এসসিও দেশগুলি তাদের অঞ্চলে শান্তি ও অর্থনৈতিক বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে।''
শরীফ বলেছেন, ''সন্ত্রাসবাদ হলো বহু মাথাওয়ালা দানব। সর্বশক্তি দিয়ে তার বিরুদ্ধে লড়তে হবে। কূটনৈতিক লাভের জন্য সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ তোলার লোভ ছাড়তে হবে। নিজের দেশে একা ও দেশের বাইরে সম্মিলিতভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।''
তিনি আরো বলেছেন, ''ঘরোয়া রাজনৈতিক লাভের জন্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধাচরণ করা উচিত নয়।'''' এবাবেই নাম না করে মোদীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন শরীফ।
আফগানিস্তান নিয়ে তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী আফগান সরকারের সঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা জরুরি।''
পুটিন যা বলেছেন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন বলেছেন, তিনি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে যাবেন। তার দাবি, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়া আরো শক্তিশালী হয়েছে। তিনি বলেছেন, এসসিও-র দেশগুলির সঙ্গে তাদের দেশের মুদ্রায় বাণিজ্য করার ফলে নিষেধাজ্ঞার ধার কমে গেছে।
রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখার জন্য এসসিও দেশগুলিকে ধন্যবাদ জানান পুটিন।
শি জিনপিং
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, ''আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দাদাগিরি ও ক্ষমতার রাজনীতির বিরোধিতা করার ফলে বিশ্ব এখন অনেক বেশি ন্যায়সঙ্গত হয়েছে৷ বিশ্বে সব দেশের জন্য সমানাধিকার, সমান সুযোগ এবং ন্যায়সঙ্গত নিয়মকানুন প্রয়োজন।''
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)