স্মার্টফোনের ওপর নজরদারি
৮ জুলাই ২০১৪বিশেষ করে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে যাঁরা যুক্তরাষ্ট্র যাত্রা করছেন, তাঁদের সিকিউরিটি চেক হবার সময় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি চালু করে দেখাতে বলতে পারেন – এ কথা ঘোষণা করেছে ইউএস ট্র্যানস্পোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্বয়ং৷ মার্কিন পরিবহণ নিরাপত্তা প্রশাসনের বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘‘ব্যাটারি ছাড়া ডিভাইসেস (অর্থাৎ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি) নিয়ে বিমানে উঠতে দেওয়া হবে না৷ সেক্ষেত্রে যাত্রীদের অতিরিক্ত স্ক্রিনিং করা হতে পারে৷''
সব মিলিয়ে সিকিউরিটি চেক-এ বাড়তি সময় লাগতে পারে, বলে ফরাসি এবং ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সতর্ক করে দিয়েছেন৷ মার্কিন পরিবহণ নিরাপত্তা প্রশাসন বা টিএসএ বস্তুত ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি-র অঙ্গ, যারা নাকি ইউরোপে এবং অন্যত্র এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে যুক্তরাষ্ট্র-গামী যাত্রীদের জুতো পরীক্ষা করে দেখতে বলেছেন, বলে মার্কিন এবিসি নিউজ সংস্থা জানিয়েছে৷
‘রিয়াল-টাইম ইন্টেলিজেন্স'
ডিএইচএস প্রধান জেহ জনসন এনবিসি টেলিভিশনকে বলেছেন: ‘‘কিছু শেষ পয়েন্ট-অফ-ডিপার্চার এয়ারপোর্টে (সিকিউরিটি চেক) বাড়ানোর প্রয়োজন আছে, বলে আমাদের মনে হয়েছে৷'' গত বুধবারেই মার্কিন কর্মকর্তারা ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখে সরাসরি উড়ালের জন্য বিমানবন্দরগুলিতে অতিরিক্ত সিকিউরিটি চেক দাবি করেছিলেন – যদিও তাঁদের কাছে কোনো বিশদ খবর আছে কিনা, তা তাঁরা জানাননি৷ তবে বিমানবন্দরগুলির কাছে এই অনুরোধ ‘‘রিয়াল-টাইম ইন্টেলিজেন্স'', অর্থাৎ অব্যবহিত তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়েছে, বলে ডিএইচএস-এর এক কর্মকর্তা এএফপি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন৷
আরেক মার্কিন কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, বিপদের উৎস কোথায় বলে তাঁরা মনে করেন: একিউএপি বা জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদা ইন দ্য অ্যারেবিয়ান পেনিনসুলা, অর্থাৎ আরব উপদ্বীপে আল-কায়েদা নামধারী সংগঠন৷ ইয়েমেন-ভিত্তিক এই শাখাটি প্রতিষ্ঠা করেন ওসাম বিন লাদেন স্বয়ং৷ মার্কিন গুপ্তচর বিভাগের খবর যে, একিউএপি বোমা তৈরির সর্বাধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে সিরিয়ায় যুদ্ধরত উগ্রপন্থিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে; উদ্দেশ্য: বোমা পাচার করে যাত্রীবাহী বিমান উড়িয়ে দেওয়া৷ এবং জার্মানি সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে সিরিয়ায় আগত জিহাদিরাও সম্ভবত সেই প্রশিক্ষণ পাচ্ছে৷
কাজেই এবার ব্রিটেনের পর ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলিতেও সিকিউরিটি চেক-এর কড়াকড়ি বাড়ছে৷ নতুন ধরনের বিস্ফোরক অথবা বোমার পিছনে যা-কে সন্দেহ করা হচ্ছে, সে হলো ইব্রাহিম আল-আসিরি, এক ৩২-বছর-বয়সি সৌদি, যে দক্ষিণ ইয়েমেনের বিক্ষুব্ধ প্রদেশগুলিতে একিউএপি-র সঙ্গে আত্মগোপন করে আছে, বলে সন্দেহ করা হচ্ছে৷ একিউএপি-র বিমান অন্তর্ঘাতের শেষ প্রচেষ্টা ছিল ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে, যখন উমর ফারূক আবদুলমুতল্লব নামের এক নাইজিরীয় নিজের জাঙিয়ায় বোমা লুকিয়ে রেখে একটি যুক্তরাষ্ট্রগামী বিমান উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে৷ ২০০১ সালে ব্রিটেনের রিচার্ড রিড জুতোয় বোমা লুকিয়ে অনুরূপ সন্ত্রাস চালানোর পরিকল্পনা করেছিল৷
এসি/ডিজি (এএফপি, এপি)