‘কঠোর শাস্তি দিয়ে প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব’
২৭ নভেম্বর ২০১২আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা গেছেন ১১০ জন৷ বাংলাদেশে এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে বহুবার৷ কিন্তু পরিস্থিতি একেবারেই বদলায়নি৷ কিছুদিন পর পরই কারখানায় আগুন লাগে, তারপর মৃত্যুর খবর, লাশ গণনা, আপনজনদের আহাজারি, নিন্দা, প্রতিবাদ, প্রতিকার কামনা৷
ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় যখন কারখানার ভেতরে কাজের পরিবেশ নেই, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র নেই, থাকলে তার ব্যবহার নেই, নেই আগুন লাগলে ভেতর থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসার ব্যবস্থা – এসব বলছিলেন তখন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল নিজেও যেন কিছুটা অস্বস্তিতে৷ অস্বস্তিতে ভোগাই স্বাভাবিক, যখনই এমন দুর্ঘটনা ঘটে তখন তো এসবই বলতে হয় তাঁকে!
তৈরি পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প মালিকদের অনেকে সম্পদের পাহাড় গড়লেও শ্রমিকরা যে কত অসহায় তা এখন আর কারোই অজানা নয়৷ ঈদের সময় বোনাস তো দূরের কথা, মজুরিটাও পান না অনেকে, মজুরির দাবিতে মিছিলে নামতে হয় তাঁদের৷ ক্ষুধার আগুন নেভাতে নিরন্তর সংগ্রামরত শ্রমিকদের জীবনপ্রদীপ হঠাৎ নিভিয়ে দেয় আগুন৷
এমন অগ্নিকাণ্ডকে স্রেফ দুর্ঘটনা বলতে এখন অনেকেরই আপত্তি৷ আগের অনেক কারখানার মতো আশুলিয়ার তাজরিনেও দেখা গেছে আগুন লাগার পর শ্রমিকরা বেরোতে পারেননি ফটক তালাবদ্ধ থাকায়৷ তাই কারখানা কর্তৃপক্ষের মানবতাবোধ, আন্তরিকতা, দায়িত্বশীলতা আবারও প্রশ্নবিদ্ধ৷ কিন্তু ঘটনার পর, তদন্ত এবং শাস্তি দাবি – এমন আর কতদিন চলবে? এমন দুর্ঘটনা কি এড়ানো সম্ভব নয়? সুলতানা কামাল বললেন, ‘‘বাংলাদেশে আইনের ঊর্ধ্বে থাকার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে৷ যারা কোনো অন্যায় করে সেটার জন্য তাদের কোনো শাস্তি পেতে হয় না৷ কখনো কখনো শুধু জরিমানা করা হয়, যে জরিমানা তাঁদের আয়ের তুলনায় কিছুই না৷ যদি কয়েকটা কঠিন শাস্তি হয়, তাহলে দোষীরা কিছুটা সাবধান হবে৷''