1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কঠোর লকডাউন, নববর্ষ আর বাজারে আগুন

১৩ এপ্রিল ২০২১

‘কঠোর লকডাউনেই' হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। আর রোজাও শুরু হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি, কাজ হারনো আর অনিশ্চয়তায় অদ্ভুত একটা অবস্থার মধ্যে আছেন দেশের মানুষ। তার মধ্যেই চলছে ঝুঁকি নিয়ে লকডাউনে বাড়ি ফেরা।

https://p.dw.com/p/3rwhs
Bangladesch, Shimulia-Banglabazar | Überfüllte Fähre kurz vor Lockdown
ছবি: bdnews24.com

সাধারণ বিবেচনায় মনে হতে পারে অনেকে উৎসবের আমেজে বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতিতে ভিন্নতা আছে। এরকম বাড়ি ফেরর অপেক্ষায় একজন আমজাদ আলি বললেন," লকডাউনে বাড়ি যাব না কী করব? ঢাকায় বসে খাব কী, বাসা ভাড়া দেব কীভাবে?” তিনি রাস্তার পাশে ছোট একটি দোকান দেন। কিন্তু লকডাউনে চালাতে পারবেননা। তাই বাড়ি যাওয়া ছাড়া তার আর কোনো উপায় নাই। এখানে থাকলে তিনি কী খাবেন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। যাত্রীবাহী কোনো যানবাহন না চললেও আশা করেন ট্রাকে বা অন্য কোনো উপায়ে যেতে পারবেন।

ধানমন্ডি এলাকার আরেকজন হকার, রাস্তার পাশে ডাব ও লেবু বিক্রি করেন। তার কথা ," লকডাউনে খাব কী। মরব নাকি? তাই আমি আমার ব্যবসা চালিয়ে যাবার চেষ্টা করব। তারপর পুলিশ যদি ধরে নেয় নেবে। কী আর করা যাবে।”

সদ্য শেষ হওয়া সাত দিনের যে লকডাউন বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে, সেটাকে তারা লকডাউন মনে করে না। কারণ দূর পাল্লার যাত্রীবাহী যানবাহন ছাড়া বাস্তবে আর সবই ছিলো খোলা। কিন্তু বুধবার থেকে যে সাত দিনের লকডাউন শুরু হচ্ছে তা কঠোর হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সব ধরনের যানবাহন বন্ধ তো থাকবেই, সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। সীমিত আকারে কাঁচাবাজার খোলা থাকলেও সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে। আর  খাবার রেস্তোরাঁ খোলা থাকবে শুধু খাবার কিনে নেয়ার জন্য। সব ধরনের অফিস বন্ধ। তবে এবারও পোশাক কারখানা খোলা থাকছে। ব্যাংক শুরুতে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হলেও শেষ পর্যন্ত সীমিত আকারে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ডা. লেনিন চৌধুরী

চিকিৎসা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ জরুরি সেবা চালু থাকবে । চালু থাকবে সংবাদমাধ্যম।

লকডাউনে সাধারণের জরুরি প্রয়োজনে বাইরে চলাচলের জন্য ‘মুভমেন্ট পাস' দেবে পুলিশ। অ্যাপস-এর মাধ্যমে এই পাসের জন্য আবেদন করতে হবে। অ্যাপসটি এরইমধ্যে চালু হয়েছে। চালুর পর প্রতি মিনিটে গড়ে ১৫ হাজার করে আবেদন হচ্ছে।

লকডাউনের আগের দিন ঢাকার সড়কে তীব্র যানজট দেখা গেছে। শপিংমল, মার্কেট ও কাঁচাজারে বেজায় ভিড়। আর ব্যাংকগুলোতে ছিলো  টাকা তুলতে লম্বা লাইন। অনেকেই সাত দিনের বাজার করে রাখছেন। আবার রোজার কারণেও ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বেড়েছে। সরকার ছয়টি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেঁধে দিলেও বাস্তবে সেই দামে পণ্য মিলছে না। আর টিসিবিও ট্রাকে করে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির কথা বললেও নির্ধারিত সময়ে ট্রাক আসে না বলে অভিযোগ আছে।

হাতিরপুল কাঁচা বাজারে শেখ সোহেল নামে একজন ক্রেতা জানান," জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ৩০ টাকা হালির লেবু এখন ১২০ টাকা। আর সরকার  কিছু পণ্যের দাম বেধে দিলেও সেই দামে কোথাও পাওয়া যায় না। আমরা যারা নির্ধারিত আয়ের মানুষ তারা চরম বিপদে আছি।”

দোকানদাররা দাবি করেন, এখনো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেনি। তবে লকডাউন শুরু হলে  সরবরাহ ব্যবস্থা কতটা সচল থাকে তার ওপর পরবর্তী পরিস্থিতি নির্ভর করছে।

এদিকে কঠোর লকডাউন শুরু আগের দিনেও বাইরে বের হওয়ার মানুষের মধ্যে তেমন স্বাস্থ্য সচেতনতা দেখা যায়নি।  মাস্ক ব্যবহারের প্রবণতা খুবই কম। মার্কেট, রাস্তাঘাট, বাসষ্ট্যান্ড সবখানেই মানুষের ভিড়।

এর আগে গত বছর করোনার কারণে মোট ৬২ দিন সাধারণ ছুটি ছিলো। আর এবছর ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল একটা ঢিলেঢালা লকডাউন হয়ে গেল। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী মনে করেন," এবার যেভাবে হাজার হাজার মানুষকে মুভমেন্ট পাস দেয়া হবে তাতে লকডাউন আর লকডাউন থাকবে না। আর পূর্ণ প্রস্তুতি না নিয়ে লকডাউন করা যায় না। এই লকডাউনে উদ্দেশ্য কী? সাত দিন পর কী হবে?”

তিনি মনে করেন," এটা কোনো পরিকল্পিত লকডাউন নয়। হঠাৎ করে নেয়া একটা সিদ্ধান্ত। তাই মানুষ বিভ্রান্ত এবং আতঙ্কিত।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য