কমলার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন ট্রাম্পের
১৪ আগস্ট ২০২০কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করলেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ''আমি শুনলাম তিনি তো ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতামানই পূরণ করতে পারছেন না। একজন আইনজীবী তো সেই কথাই লিখেছেন। আর ওই আইনজীবী যথেষ্ট শিক্ষিত ও প্রতিভাবান। এটা খুবই গুরুতর ব্যাপার। বলা হচ্ছে, তিনি না কি অ্যামেরিকার নাগরিক নন।''
তারপরেই ট্রাম্প বলেন, ''আমি জানি না, এটা ঠিক না ভুল। আশা করছি, তাঁকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে বাছাই করার আগে ডেমোক্র্যাটরা নিশ্চয়ই সবকিছু ভালো করে দেখে নিয়েছেন।''
ট্রাম্প ঠিক একই ধরনের প্রচার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধেও করেছিলেন। বারবার প্রশ্ন তুলেছিলেন ওবামার নাগরিকত্ব নিয়ে।
কমলা হ্যারিসকে নিয়ে প্রশ্নটা তুলেছেন আইনের অধ্যাপক জন ইস্টম্যান। তাঁর যুক্তি হলো, কমলার বাবা জামাইকার এবং মা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাঁরা অভিবাসী। তাঁরা যদি স্টুডেন্টস ভিসা নিয়ে অ্যামেরিকায় এসে থাকেন এবং কমলার যখন জন্ম হচ্ছে তখনও যদি তাঁরা অ্যামেরিকার নাগরিকত্ব না নিয়ে থাকেন তাহলে কমলাকে অ্যামেরিকার নাগরিক বলা যাবে না। কমলার জন্ম হয়েছিল ১৯৬৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায়।
কিন্তু অ্যামেরিকার অধিকাংশ আইনবিদ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ইস্টম্যানের যুক্তিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, মার্কিন সংবিধানে পরিষ্কারভাবে বলা আছে, অ্যামেরিকায় জন্ম হলেই তিনি জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক। ইস্টম্যানের তত্ত্বকে বর্ণবাদী ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
বিবিসি-কে বার্কলে ল স্কুলের আরউইন চেমেরেনস্কি বলেছেন, ''চতুর্দশ সংশোধনে বলা হয়েছে, যাঁরা অ্যামেরিকায় জন্মাবেন, তাঁরাই মার্কিন নাগরিক। ১৮৯০ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্টও তাই বলছে। কমলা হ্যারিসের জন্ম অ্যামেরিকায়।'' নিউ ইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, হার্ভার্ড ল স্কুলের অধ্যাপক লরেন্স ট্রিবে বলেছেন, ''আমি এই বিষয়ে কথাই বলতে চাই না। কারণ, এটা একেবারেই বোকার মতো আলোচনা হচ্ছে। যাঁরা সংবিধান নিয়ে চর্চা করেন, চতুর্দশ সংশোধনের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ পড়েছেন, তাঁরা কখনই এই যুক্তি মানবেন না যে, যিনি জন্মসূত্রে অ্যামেরিকান তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে পারবেন না, কারণ তাঁর বাবা বা মা অভিবাসী ছিলেন।''
ট্রাম্প অবশ্য জন ইস্টম্যানের মত নিয়েই হইচই শুরু করে দিয়েছেন এবং কমলার নাগরিকত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
জিএইচ/এসজি(এপি, রয়টার্স, ডিপিএ)