1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা কালে রমরমা স্টার্টআপ

৩০ মার্চ ২০২০

কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর রূপ নেওয়ায় বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্তব্ধ হয়ে গেছে৷ তবে এর মধ্যেও কিছু স্টার্টাআপ কোম্পানি জমজমাট ব্যবসা করছে৷

https://p.dw.com/p/3aCJ8
ছবি: Uvis

স্কেলেটর ও হ্যান্ডরেলিং জীবাণু মুক্ত করা

বিমানবন্দর, ট্রেন স্টেশন ও ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলোতে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ স্কেলেটর ব্যবহার করেন৷ নানা মানুষের ছোঁয়ায় স্কেলেটরের বেল্ট ও হ্যান্ডরেলিংগুলো জীবাণুর আড্ডাখানায় পরিণত হয়৷  সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ানো করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে যা আরো আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ অনেকে রেলিং না ধরে এগুলো ব্যবহার করছেন৷ যা আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ৷ কারণ চলন্ত অবস্থায় এভাবে উঠতে গিয়ে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা৷ 

এই অবস্থাকে পুঁজি করে ক্যাথারিন ওবলাডেন এবং তানজা নিকেল আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ব্যবহার করে এগুলোকে জীবাণুমুক্ত করার উপায় বাজারে নিয়ে এসেছেন৷ তারা স্কেলেটরের নিচে বসানোর জন্য ছোট একটি ইউভিলাইট বক্স তৈরি করেছেন৷ সেই লাইট থেকে বের হওয়া আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি স্কেলেটরের ব্যাক্টেরিয়া, ফাঙ্গাস ও ভাইরাস মেরে ফেলবে৷

করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে তাদের লাইট কতটা কার্যকর তা এখনো নিশ্চিত নন বলে স্বীকার করেন ওবলাডেন৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা এখনো তাদের আবিষ্কৃত যন্ত্রটি গবেষণাগারে পরীক্ষা করাতে পারেননি৷

তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন,‘‘সাধারনভাবে বললে এটা খুবই কার্যকর৷''

২০১০ সালে যখন সোয়াইন ফ্লুর প্রাদুর্ভাব হয়েছিল তখন নিকেল এবং ওবলাডেন দুজনই শিক্ষার্থী ছিলেন৷ তখনই প্রথম তাদের মাথায় জনসমাগমপূর্ণ স্থান জীবাণুমুক্ত করার পরিকল্পনা আসে এবং দুইজনে একসঙ্গে কাজ শুরু করেন৷ ২০১৬ সালে তাদের এই পরিকল্পনা একটি স্টার্টআপ প্রতিযোগিতা জেতে এবং তারা কোলনের একটি ইউভিআইএস কোম্পানির সহায়তায় যন্ত্র তৈরির কাজ শুরু করেন৷

তাদের এ যন্ত্রের চাহিদ দ্রুত বাড়ছে জানিয়ে ওবলাডেন বলেন, ‘‘এশিয়ায় দেশগুলোতে চাহিদা উল্লেখযোগ্যহারে বাড়ছে৷ খুব শিগগিরই সিঙ্গাপুরে আমারদের প্রথম চালান যাবে৷

‘‘আমাদের গুদাম খালি হয়ে গেছে৷ স্থায়ী পাঁচ কর্মী দিনরাত পরিশ্রম করেও চাহিদা মেটাতে পারছেন না৷ তাই আমরা অস্থায়ীভাবে বেশ কয়েকজনকে নিয়োগ দিয়েছি৷''

শপিং ট্রলির জন্য বিশেষ সুরক্ষা পরত

নিকেল এবং ওবলাডেনের কোম্পানির আরো একটি আবিষ্কারের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে৷ এ বছরের শুরু তারা পণ্যটির উৎপাদন শুরু করেন৷ শপিং ট্রলি জীবাণুমুক্ত রাখতে সেটির উপর বাড়তি সুরক্ষা পরত দেয়া৷ বর্তমান পরিস্থিতে যেটি ‘হটকেকে' পরিণত হয়েছে৷ কোলনের কয়েকটি সুপারমার্কেট এটি ব্যবহার করা শুরু করেছে বলেও জানান ওবলাডেন৷ 

তাদের এই জীবাণুনাশক পরত কাঁচ, ধাতব বস্তু ও প্লাস্টিকের উপর কার্যকর৷ তবে নিজে নিজে নয় বরং অবশ্যই পেশাদার লোক দিয়ে এই জীবাণুনাশক পরত লাগাতে হবে৷

‘‘এটার চাহিদা সত্যি ভীষণ বেড়ে গেছে৷ বিশেষ করে জার্মানিতে৷ চাহিদা মেটাতে আমাদের কোটিং ক্রদের অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হচ্ছে৷ এই সংকট আমাদের ব্যবসার জন্য আশির্বাদ৷ করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি কেউ গুরুত্ব দিত না৷''

শিক্ষামূলক অ্যাপ ও গেমস

করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে আরো একটি ব্যবসায় ফুলেফেঁপে উঠেছে৷ সেটা হলো অ্যাপস ও গেমসের মাধ্যমে শিশুদের ঘরে বসে শিক্ষা দান৷ করোনা আতঙ্কে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে সবার আগে বন্ধ হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান৷ স্কুল বন্ধ থাকায় অনেকদিন ধরে শিশুরা বাড়িতেই আছে৷ করোনা আতঙ্ক বোঝায় বয়সও তাদের হয়নি ৷ তাই বাড়িতে তাদের বিনোদনের জন্য বাবা-মাকে এখন অনলাইনে নানা অ্যাপস ও গেমসের সাহায্য নিতে হচ্ছে৷ তাতেই এ ধরনের সেবা দেওয়া কোম্পানিগুলোর ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছে৷ ‘স্কিলফরস্কুল' বা ‘শেয়ারজোন' মত অ্যাপের দর্শক রকেটগতিতে বাড়ছে৷

শেয়ারজোনের নিলস সায়েকার্ট বলেন, ‘‘কয়েক সপ্তাহ আগেও প্রতিদিন গড়ে আমাদের নতুন গ্রাহক বাড়তো ৩০০ থেকে ৫০০ জন৷ কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে পাঁচ/ছয় গুণ হারে নতুন গ্রাহক বাড়ছে৷''

যতদিন স্কুল বন্ধ থাকবে তাদের গ্রাহক এই হারে বাড়বে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি৷

মাথিলডা ইয়োডানোভা ডুডা/এসএনএল/