1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা রুখতে ভিলওয়াড়া মডেল

১৩ এপ্রিল ২০২০

পথ দেখাচ্ছে রাজস্থানের ভিলওয়াড়া। করোনা রুখতে এখন গোটা ভারতই অনুসরণ করছে তাদের মডেল।

https://p.dw.com/p/3apMp
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

ভিলওয়াড়া হলো রাজস্থানের একটি জেলা। গত ১৯ মার্চ সেখানে প্রথম একজন করোনায় আক্রান্ত হন। এক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। এরপর তিনদিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ২০। কারণ, ওই চিকিৎসক কয়েকদিনে সাত হাজার লোককে চিকিৎসা করেছিলেন। পরিস্থিতি দেখে মাথায় বাজ পড়ে জেলাশাসক রাজেন্দ্র ভাটের। তিনি করোনা রুখতে তৈরি করেন এক কঠিন পরিকল্পনা। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সম্মতি চান এবং পেয়েও যান। সেই পরিকল্পনাই হলো ভিলওয়াড়া মডেল, যা এখন রূপায়ণ করা হচ্ছে পুরো দেশে।

ভিলওয়াড়া মডেল হলো, পুরো এলাকা সিল করে দিতে হবে। সেখানে অধিকাংশ লোককে করোনার পরীক্ষা করতে হবে। আক্রান্ত হলেই আলাদা করোনা সেন্টারে রেখে চিকিৎসা করা হবে। প্রতিটি মানুষের কাছে খাবার, ওষুধ পৌঁছে দেবেন সরকারি কর্মীরা। সেই সঙ্গে পৌঁছে দেওয়া হবে পশুখাদ্য। যাতে পালিত পশুর কোনও অসুবিধা না হয়। বাড়ি থেকে কেউ বেরতে পারবেন না। বেরলেই শাস্তি।  ভিলওয়াড়া শহরে পাঁচ লাখ ও গ্রামে ২০ লাখ লোক থাকেন। শহর থেকে কেউ বাইরে বেরতে পারেননি। গ্রাম থেকেও নয়। পুরো জেলা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। সরকারি গাড়ি ছাড়া অন্য কোনও গাড়ি চলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সরকারি কর্মীদের সাহায্যে দিনরাত কাজ করে ২২ লাখ লোকের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন রাজেন্দ্র।

শুধু সিলই নয়, জেলার ভিতর যেখানে যেখানে লোকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেই অঞ্চলগুলিকে হট স্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেই অঞ্চলগুলিতে লাগাতার করোনার পরীক্ষা হয়েছে। জীবাণুনাশক ছড়ানো হয়েছে। হাসপাতাল ছাড়াও হস্টেল ও কিছু প্রতিষ্ঠানে আইসোলেশন ওয়ার্ড বানানো হয়েছিল।

ফল কী হয়েছে? মৃত্যু আটকে রাখা গিয়েছে মাত্র তিন জনে। বাকি সকলে রোগমুক্ত। ৩১ মার্চের পর থেকে আর কেউ সেখানে করোনায় আক্রান্ত হননি। রোববারের পরিসংখ্যানও বলছে, ভিলওয়াড়াতে করোনা আক্রান্ত নেই। সংবাদমাধ্যমকে রাজেন্দ্র বলেছেন, ''আমি কেবল দয়ামায়াহীনভাবে কঠোর ব্যবস্থা চালু করে সাফল্য পেয়েছি।''

রাজেন্দ্রর দেখানো এই পথেই করোনাকে রুখতে চাইছে বাকি সব রাজ্য সরকার। দিল্লিতে এখন ৪৩টি হটস্পট চিহ্নিত করে সেখানে অধিকাংশ লোকের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। কাউকে ঢুকতে বা বেরতে দেওয়া হচ্ছে না। সরকারি কর্মীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দিচ্ছেন। প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন সরকারি কর্মীরা। সর্দি, কাশি থাকলেই করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। দিল্লিতে হাসপাতাল ছাড়া স্টেডিয়ামে, স্টেশনে, ট্রেনের কামরায় আইসোলেশন ওয়ার্ড বানানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্য এখন এই মডেলেই করোনার সঙ্গে লড়াই করছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''এটা আসলে উহান-মডেল। করোনার প্রাদুর্ভাব হওয়ার পরে উহানকে সিল করে দেওয়া হয়েছিল। যাতে তা না ছড়ায়। ভিলওয়াড়াতেও তাই করা হয়েছে। আসলে করোনার তো কোনও ওষুধ বা প্রতিষেধক নেই। তাই অন্তত তা যাতে না ছড়ায় তার চেষ্টা হচ্ছে। ভিলওয়াড়া মডেল এখন অন্যরাও অনুসরণ করছে। পশ্চিমবঙ্গও একই পথে চলছে। আসলে সকলেই ট্রায়াল অ্যান্ড এরর পদ্ধতি নিয়ে চলছেন। উদ্দেশ্য করোনার প্রসার রোধ করা।''

আর সেখানে পথ দেখাচ্ছে ভিলওয়াড়া। পথ দেখাচ্ছেন রাজেন্দ্র ভাট।

জিএইচ/এসজি(এএনআই, এই সময়)