কলকাতায় নার্স-পুলিশ ধস্তাধস্তি
২৪ মে ২০২২কলকাতা এখন একের পর এক বিক্ষোভে উত্তাল। মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন এসএসসি-দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হবু শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সল্টলেকে নার্সিং পাস করা ছেলেমেয়েরা চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। সোমবার কলেজ স্ট্রিটে রাস্তা আটকে অনলাইনে পরীক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ছাত্রছাত্রীরা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হস্টেলে ঠিকা শ্রমিকরাও অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন। তারা অনেক দিন ধরে টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।
নার্সদের বিক্ষোভ
সোমবার সকাল নয়টা থেকে সল্টলেকে স্বাস্থ্যভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ডিগ্রিপ্রাপ্ত নার্সরা। তাদের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তাধস্তি হয়। নার্সরা মঙ্গলবারও বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। করোনার সময় তারা নিয়মিত ডিউটি করেছেন। সেই করোনা-যোদ্ধা নার্সদের দাবি, সরকার যে মেধাতালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে স্বচ্ছ্বতা নেই। তার মধ্যে দুর্নীতি আছে বলে তাদের অভিযোগ।
মঙ্গলবার বিক্ষোভরত নার্সরা জোর করে স্বাস্থ্যভবনে ঢুকতে গেলে গোলমাল শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কিতে একজন পুলিশ পড়ে যান। তারপর নার্সদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। প্রচুর নার্সকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।
গত ২০ মে প্রায় তিন হাজার নার্সকে নিয়োগ করার জন্য একটি মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, সেখানে দেখা যাচ্ছে, তাদের যোগ্যতামান থাকা সত্ত্বেও নাম নেই। আবার অন্য রাজ্যে অনলাইন পরীক্ষায় পাস করা অনেকের নাম রয়েছে। সংরক্ষিত পদ খালি পড়ে আছে। কিন্তু অসংরক্ষিত পদে তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের নাম রয়েছে। তাদের দাবি, এই মেধাতিলিকায় দুর্নীতি আছে।
নার্সরা হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের সচিবের সঙ্গে দেখা করলে তিনি তাদের স্বাস্থ্যভবনে যোগাযোগ করতে বলেন। নার্সদের দাবি, তিনি জানিয়েছেন, তালিকা স্বাস্থ্যভবন থেকে তৈরি হয়ে আসে। বোর্ডের চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায় জানিয়েছেন, তিন বছর পর এত নার্সকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। যারা ভালো ফল করেছেন, তারা সকলেই সুযোগ পেয়েছেন।
কিন্তু আন্দোলনরত নার্সরা দাবি করেছেন, যা পদ রয়েছে, তাতে তাদের সকলের চাকরি হওয়ার কথা। কিন্তু তাদের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নেয়া হচ্ছে না। নার্সেস ইউনিটির সম্পাদক ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেছেন, মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও অনেকে কাউন্সেলিংয়ের ডাক পাননি।
বিক্ষোভরত নার্সদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। নার্সদের অভিযোগ, নারী পুলিশ প্রায় ছিল না। পুরুষ পুলিশরা তাদের সরিয়ে দেয়। পরে নারী পুলিশ আসে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
পড়ুয়াদের বিক্ষোভ
সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা কলেজ স্ট্রিটে বিক্ষোভ দেখান। হাজারখানেক পড়ুয়া এই বিক্ষোভে সামিল হন। তাদের দাবি, অনলাইনেই পরীক্ষা নিতে হবে। করোনা কম বলে এখন অফলাইনে হলে গিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা।
পড়ুয়াদের দাবি, তাদের খুব কমদিন অফলাইন ক্লাস হয়েছে। সিলেবাস শেষ হয়নি। এই অবস্থায় এখন কেন অফলাইন পরীক্ষা হবে? কয়েক ঘণ্টা ধরে রাস্তা আটকে তাদের বিক্ষোভ চলে।
এসএসসি বিক্ষোভ
মেয়ো রোডের গান্ধী মূর্তির সামনে এসএসসি-দুর্নীতি নিয়ে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা জানিয়ে দিয়েছেন, যতদিন সকলের চাকরি না হচ্ছে, ততদিন বিক্ষোভ চলবে। তাদের সমর্থনে সিপিআই(এমএল)-ও সোমবার কলকাতায় বিক্ষোভ দেখায়।
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)