পুরনো বই কেটে শিল্প
১৯ জানুয়ারি ২০১৭শল্যচিকিৎসকরা যেমন অস্ত্রোপচার করেন, মালেনা বালকার্সেল তেমন কাগজ কেটে এক স্বপ্নের জগৎ সৃষ্টি করেন৷ মালেনা বলেন, ‘‘কাগজের মজা হলো এই যে, কাগজ কাটা যায় আর....কাগজ কেটে চমৎকার সব মূর্তি সৃষ্টি করা যায়৷''
মূর্তি বলতে গোটা ল্যান্ডস্কেপ, বা বিশেষ বিশেষ মুহূর্ত কিংবা দৃশ্য৷ স্পেনের শিল্পী মালেনা সপ্তাহের পর সপ্তাহ পরিশ্রম করে এই কাগজের দুনিয়া সৃষ্টি করেন৷ মালেনা শোনালেন কিভাবে ‘‘রিসাইক্লিং আর ডু-ইট-ইয়োরসেলফ-এর যখন ধুম উঠল, তখন আমার কাছে প্রধানত পুরনো বই ছিল৷ আমি পড়তে ভালোবাসি, কিন্তু আমার এমন কিছু বই ছিল, যা আমি আর তখন পড়ি না৷''
কিন্তু শুধু নিজের পুরনো বই কেটে আর মালেনার কাজ চলছে না৷ কাজেই মালেনা তাঁর কুকুর অ্যাটিলাকে নিয়ে নিয়মিত বেরোন পুরনো বইয়ের খোঁজে৷ যান আলিকান্টে শহরের পুরনো বই-এর দোকান, এমনকি অন্যান্য পড়ুয়াদের কাছে৷ পুরনো বই যোগাড় করে নিয়ে আসেন তাঁর ফ্ল্যাটে: সেখানে তারা শিল্পকর্ম হিসেবে পুনর্জন্ম গ্রহণ করে৷
মালেনার তাঁর কাগজের ভাস্কর্যের জন্য আইডিয়ার কোনোদিনই অভাব ঘটেনি: ‘‘গ্রিসের প্রাচীন কিংবদন্তি অথবা ইতিহাসের সব ব্যক্তিত্ব কিংবা ছোটদের রূপকথা, যেমন আঁতোয়া দ্য সাঁজুপেরির ‘ছোট্ট রাজপুত্র', যেটা আমি এখন তৈরি করছি৷ অথবা রেড রাইডিং হুড, তাও আমি বার দু'য়েক করেছি৷ কিংবা অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড৷ রূপকথা বা ইতিহাস থেকে যা না নিই, তার সবটাই আমার নিজের কল্পনা৷''
আলিকান্টে হলো মালেনা বালকার্সেল-এর প্রেরণার উৎস৷ শহরটির তিন হাজার বছরের ইতিহাসের অনেক চিহ্ন বর্তমান, ঐশ্বর্য ও ধ্বংস, সেই সঙ্গে ভূমধ্যসাগরের উপকূল৷ একজন শিল্পীর পক্ষে সাগর বা নদীর কাছাকাছি থাকাটা জরুরি৷ বাড়িতে নিজের স্টুডিওতে বসে মালেনা প্রেরণাকে শিল্পকর্মে পরিণত করেন – প্রতিটি খুঁটিনাটির দিকে নজর রেখে৷ খরিদ্দারদের সেটা ভালো লাগে৷
মালেনা বালকার্সেল-এর কাগজের শিল্পকলার নাম ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি৷ ইতিপূর্বে তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে ভাষাশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন৷ মাত্র তিন বছর আগে তিনি কাগজ কেটে শিল্পসৃষ্টি শুরু করেন৷ মালেনা বালকার্সেল তাঁর প্রতিভাকে মজা ও ব্যবসাবুদ্ধির সঙ্গে মিশিয়ে আশ্চর্য সাফল্য পেয়েছেন৷
মার্কুস ব্যোহনিশ/এসি