‘‘কান পাতলেই শুনতে পাই....''
২৫ মার্চ ২০১৫সামহয়্যার ইন ব্লগে নূর মোহাম্মদ নূরু লিখেছেন, ‘‘২৫ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নৃশংস, ভয়ঙ্কর ও বিভীষিকাময় রাত৷
ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে ৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়৷ বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশ নামক নতুন রাষ্ট্রের৷ মাত্র নয় মাসে এত বিপুল সংখ্যক মানুষ হত্যা ও নারী নিগ্রহের নজির পৃথিবীর ইতিহাসে আর নেই৷ নয় মাসব্যাপী গণহত্যার শিকার ব্যক্তিদের অর্ধেকই ছিলেন নারী৷ এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় অসংখ্য নারী পাকিস্তানি সেনা ও সহযোগী বাহিনীর সদস্যদের ধর্ষণের শিকার হন৷ গবেষক সুসান ব্রাউনমিলার ‘এগেনস্ট আওয়ার উইল: মেন-উইমেন অ্যান্ড রেপ' বইতে লিখেছেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ধর্ষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে আট বছরের শিশু থেকে ৭৫ বছরের বৃদ্ধাকে পর্যন্ত বর্বরভাবে নির্যাতন করা হয়েছে৷''
একই ব্লগে জুন এক মুক্তিযোদ্ধার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন৷ মুক্তিযোদ্ধার নাম মনসুরুল আজীম৷
আজীম বলেছেন, ‘‘উনসত্তরের গণ-আন্দোলনের জোয়ারে সকল ধারার রাজনীতি এক হয়ে বাঙালির মনে যে স্বাধীনতার বোধ জন্ম দিয়েছিল তা আমাকেও গ্রাস করেছিল৷ যার ফলশ্রুতিতে ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলাম দেশকে মুক্ত করার এক দৃপ্ত শপথ নিয়ে৷
আমি তখন ঢাকা কলেজের ইন্টারমিডিয়েট এর প্রথম বর্ষের ছাত্র৷ বয়স ১৮ এর কাছাকাছি৷ প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল, অর্ধেক পরীক্ষা শেষ না হতেই বেজে উঠলো মুক্তিযুদ্ধের দামামা৷ আমিও নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না৷ মানসিকভাবে তৈরি হলাম মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য৷...''
সহীদুল হক মাণইক লিখেছেন, ‘‘মানব ইতিহাসের অন্যতম বর্বর নিষ্ঠুরতম গণহত্যার একটি রাত৷ একাত্তরের ২৫শে মার্চের সেই রাত৷ বিশ্ব ইতিহাসের নৃশংসতম এবং বৃহত্তম এক গণহত্যার সূচনা হয় এদিন, যা পরিচালনা করেছিল তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল ইয়াহিয়া খান৷''
মোঃ হাফিজুর রহমান সাগর লিখেছেন একটি কবিতা৷
‘‘হে আমার স্বদেশ,
কতবার ধর্ষিত হলে পরে
ইতিহাস তোমায় রেহাই দেবে?
সেই একাত্তর,
ভেবেছিলে শেষ!
অথচ এই উনচল্লিশটা বছর
প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্ত কি তুমি ধর্ষিত হওনি?
তোমার শরীরে অপমানের চিহ্ন,
বাতাসে অসুস্থ কামনার আশটে গন্ধ৷
প্রমাণ করতে পারি,
আমি বধির নই৷
কান পাতলেই শুনতে পাই-
তোমার চাপা কান্না, আমার জাতীয় সংগীত৷''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন