1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুক্তরাষ্ট্রের ‘কাপুরুষ' ডাক্তার

৮ আগস্ট ২০১৫

সিংহ হত্যার অভিযোগে বিচার করতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ওয়াল্টার জেমস পামারকে ফেরত চেয়েছে জিম্বাবোয়ে৷ সিংহ হত্যা তোলপাড় শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রের বিমান সংস্থাগুলো আফ্রিকার ‘বিগ ফাইভ' প্রাণীদের বহন না করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/1GBQl
Simbabwe Löwen Cecil and Jericho
ছবি: Brent Stapelkamp

ঘটনার নায়ক জিম্বাবোয়ের ‘সেসিল' নামের একটি সিংহ৷ কালো কেশরধারী সিংহটি ছিল জিম্বাবোয়ের হয়াঙ্গে ন্যাশনাল পার্কের প্রধান আকর্ষণ৷ কালো কেশরের সিংহ এমনিতেই বিরল, তার ওপর জিম্বাবোয়ের সবচেয়ে বেশি বয়সি সিংহও সেসিল৷ জিম্বাবোয়ের বন্য প্রাণীকূলের তারকা সেসিলকে শিকারের নামে নৃশংসভাবে হত্যা করেন ওয়াল্টার জেমস পামার৷ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক পামার পেশায় দাঁতের ডাক্তার৷ তবে নেশা তীর-ধনুক দিয়ে বন্যপ্রাণী শিকার করা৷ শিকারের নেশাতেই তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে যান জিম্বাবোয়ে এবং গিয়ে সেসিলকে হত্যা করেন৷ ঘটনাটি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়৷ বিশ্বব্যাপী ওঠে সেসিল হত্যার বিচারের দাবি৷ পামারকে ‘কাপুরুষ' বলে তার শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে বিভিন্ন দেশের মানুষ৷ ইন্টারনেটে একটি ফর্মে স্বাক্ষর করে এ পর্যন্ত মোট ৮ লাখ ৫০ হাজার মানুষ এই দাবি জানান৷

এদিকে জিম্বাবোয়ে সরকার সেসিল হত্যায় জড়িত একজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে৷ গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি সেসিল হত্যায় পামারের গাইড হিসেবে কাজ করেছিলেন৷ তাকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে ওয়াল্টার জেমস পামারকে ফেরতও চেয়েছে জিম্বাবোয়ে৷ যুক্তরাষ্ট্রের অনেকেই চান পামারকে বিচারের জন্য জিম্বাবোয়েতে পাঠানো হোক৷ এ বিষয়ে জিম্বাবোয়েকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়ে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষাধিক নাগরিক হোয়াইট হাউসে চিঠি লিখেছেন৷

ধনাঢ্য ডাক্তার ওয়াল্টার জেমস পামার ঘটনা জানাজানির পরই দুঃখ প্রকাশ করেন৷ তাঁর দাবি, সেসিল যে সুপরিচিত সিংহ এবং তা নিয়ে যে গবেষণা চলছিল, তা তিনি জানতেন না৷ পামার জানিয়েছেন, বৈধভাবে সিংহ শিকার করার জন্য তিনি ৫০ হাজার ডলার খরচ করেছেন৷ সেসিলকে শিকারের সময় জিম্বাবোয়ের একজন গাইডও ছিলেন তাঁর সঙ্গে৷ পামার জানান, সেসিলকে হত্যা করার পর তার গলায় ‘ট্র্যাকিং কলার' দেখেই তিনি সিংহটির গুরুত্ব বুঝতে পারেন৷

পামারের এমন দাবির ফলে অবশ্য তার বিরুদ্ধে জনরোষ কমেনি৷ তবে জিম্বাবোয়ে সরকার হয়াঙ্গে ন্যাশনাল পার্কের সিংহ, চিতাবাঘ, হাতি, গন্ডার এবং মহিষ হত্যার বিরুদ্ধে আইন কঠোর করছে৷ শিকার করা কঠিন বলে আফ্রিকায় এই পাঁচটি প্রাণী ‘বিগ ফাইভ' নামে পরিচিত৷

জানা গেছে, গত ৩ জুলাই পামার ও তাঁর লোকজন গাড়ির পেছনে মাংসের টোপ বেঁধে সেসিলকে প্রলুব্ধ করে৷ মাংসের লোভে গাড়ির পেছনে ছুটতে ছুটতে ন্যাশনাল পার্কের বাইরে চলে যায় সেসিল৷ তারপর সিংহটিকে তীর ছুড়ে আহত করেন পামার৷ আহত সেসিল প্রাণ বাঁচাতে গহিন জঙ্গলে ঢুকে পড়ে৷ কিন্তু পামার এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা তবু তাকে ছাড়েনি৷ ৪০ ঘণ্টা ধরে খুঁজে অবশেষে তারা পেয়ে যায় সিংহটিকে৷ বাগে পেয়ে আহত সিংহটিকেই গুলি করে হত্যা করেন পামার৷ পরে সিংহের মাথা কেটে, দেহ থেকে চামড়া ছাড়িয়ে নিয়ে ‘ট্র্যাকিং কলার' লুকানোরও চেষ্টা করা হয়৷ শেষ পর্যন্ত ‘ট্র্যাকিং কলার'-এর কারণেই সেসিলের মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হয় জিম্বাবোয়ের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ৷

মৃত্যুর সময় সেসিলের বয়স হয়েছিল ১৩ বছর৷ তাকে দেখতে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ যেত হয়াঙ্গে ন্যাশনাল পার্কে৷ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের গবেষণার অংশও ছিল সেসিল৷ সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সেসিলের গলায় বেঁধে দেয়া হয়েছিল ‘জিপিএস ট্র্যাকিং কলার'৷ স্বাভাবিক অবস্থাতে যাতে সিংহটিকে খুঁজে পাওয়া যায় এবং তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা যায়, সেই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হলেও কলারটি শেষ পর্যন্ত সেসিল হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে৷

এসিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য