কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড বহাল
৬ এপ্রিল ২০১৫সোমবার দিনের শুরুতেই প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দেন৷ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, ‘‘রিভিউ খারিজ হওয়ার পর এখন বাকি আছে শুধু প্রাণভিক্ষার আবেদন৷''
একাত্তরে শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের দায়ে ২০১৩ সালের ৯ই মে কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইবুন্যাল-২৷ গত বছরের ৩রা নভেম্বর কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ৷ এ রায় পূর্ণাঙ্গ আকারে প্রকাশিত হলে গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইবুন্যাল -২৷ পরদিন ট্রাইবুন্যাল -২ মৃত্যু পরোয়ানায় সই করে কারাগারে পাঠালে কামারুজ্জামানকে তা পড়ে শোনানো হয়৷ পরে ৫ই মার্চ ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করে আসামিপক্ষ৷ সোমবার সেই আবেদন খারিজ করল আপিল বিভাগ৷
রিভিউ আবেদন খারিজের পর অ্যাটর্নি জেনালের মাহবুবে আলম জানান, ‘‘রিভিউ আবেদন খারিজের মধ্য দিয়ে বিচার প্রক্রিয়ার পরিসমাপ্তির পর এখন রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতের বিষয়টি নিষ্পত্তি হলেই সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধী মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে৷'' তবে কখন দণ্ড কার্যকর হবে সেটা সরকার নির্ধারণ করবে বলে জানান তিনি৷
মাহবুবে আলম বলেন, ‘‘প্রাণভিক্ষার আবেদন নিষ্পত্তির জন্য আইনে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি৷ আসামি কখন প্রাণভিক্ষা চাইবেন- সে বিষয়েও স্পষ্ট কোনো বিধান নাই৷ এর আগে কাদের মোল্লার রিভিউ পিটিশন খারিজের রায়ে প্রাণভিক্ষার আবেদন করার জন্য ‘যৌক্তিক সময়' দেওয়ার কথা বলা হয়েছে৷''
এদিকে কামারুজ্জামানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করার পর আমরা পরবর্তী আইনগত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব৷ তিনি প্রাণভিক্ষা চাইবেন কিনা এটা তাঁর নিজস্ব ব্যাপার৷'' আইনজীবীদের সোমবার বিকেলে কারা কর্তৃপক্ষ কামারুজ্জামানের সাথে দেখা করার অনুমতি দিয়েছে৷
কামারুজ্জামানের ছেলে হাসান ইকবাল ডয়চে ভেলেকে জানান, আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করার পর তাদের পরিবারের সদস্যদের দেখা করার সুযোগ দেয়া হবে৷ তিনিও বলেন, ‘‘বাবা (কামারুজ্জামান) প্রাণভিক্ষা চাইবেন কিনা তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার৷ আমাদের এখনো কিছু জানাননি৷''
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও কাদের মোল্লার মামলায় রিভিউ খারিজের দিনই দণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল৷ কারণ তাঁরা তখন প্রাণভিক্ষা চাননি৷
এর আগে আপিল বিভাগে আসা যুদ্ধাপরাধের প্রথম মামলার চূড়ান্ত রায়ে ২০১৩ সালের ১২ই ডিসেম্বর জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷ আর দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আজীবন কারাদণ্ড দেয় আপিল বিভাগ৷ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দণ্ড কার্যকর হলে এটি হবে যুদ্ধাপরাধ মামলার দ্বিতীয় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা৷
হরতাল
রায়ের প্রতিবাদে মঙ্গল ও বুধবার সারাদেশে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী৷ এদিকে, রায়ের পর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নোয়াখালীতে একজন জামায়াত সমর্থকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷