ইউরো ২০১২
১৫ মে ২০১২কোয়ার্টার ফাইনালে কে কে খেলবে? ইয়ানেক আশা করছে পোল্যান্ড এবং জার্মানিকে সে মাঠে পাবে৷ পোল্যান্ডে ইউরো কাপের টিকিট ছেড়ে দেয়া হয়েছিল লটারির মাধ্যমে৷ অনেকেই আশা করেছিল, হয়তো তাদের কপালে একটি করে হলেও টিকিট উঠবে৷ তবে সেটা হয়নি৷
যারা টিকিট পায়নি তাদের হয়তো বাড়িতে বা বারে বসে বড় স্ক্রিনে খেলা দেখতে হবে৷ কারণ মাত্র ৪১ শতাংশ টিকিট ছাড়া হয়েছিল সাধারণ মানুষের জন্য৷
এদিকে অনেক টিকিটই ধরে রেখেছে পোল্যান্ডের জাতীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন৷ আর বেশিরভাগ টিকিটই ভিআইপি এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য রেখে দেয়া হয়েছে৷ এর মধ্যে স্পনসর এবং বিভিন্ন শহর পরিষদের ব্যক্তিরাও রয়েছেন৷ এছাড়া, বহু টিকিট নাকি বিক্রি করা হয়েছে সমাজ কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য৷
পোসনান'এর সিটি কাউন্সিলর টোমাস লেওয়ানডন্সকি অবশ্য দৈনিক পত্রিকা গাজেটা ভিবরসাকে জানান, ‘‘সবাইকে যদি অর্থের বিনিময়ে টিকিট কিনতে হয়, তাহলে তা যথার্থ হবে৷ তবে আমি বিনামূল্যে টিকিট পেয়েছি কারণ কাউন্সিলের পক্ষ হয়ে অনেক ধরণের দায়িত্ব আমরা কাঁধে নিয়েছি৷ টুর্নামেন্টের আয়োজনে আমাদের অনেক কাজ করতে হয়েছে, খাটতে হয়েছে৷ তাই আমাদের হাতে কয়েকটি টিকিট এসেছে বিনামূল্যে৷''
এই মুহূর্তে টিকিটের দাম প্রায় আড়াই হাজার স্লটি অর্থাৎ সাড়ে সাতশো ডলার৷ এবং খেলা যত এগিয়ে আসছে টিকিটের দাম ততই বেড়ে চলেছে৷ ইউক্রেনের অনেক ফুটবল ফ্যানই হতাশ এই অবস্থা দেখে৷ তাদের টিকিটের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু বেশিরভাগের ভাগ্যেই কোন টিকিট জোটে নি৷
খেলার টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না – এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই কালো বাজারে টিকিট ছাড়া হয়৷ টিকিটের মূল্য হয় যায় প্রায় দশগুন বেশি৷ অথচ একমাস আগেও ইন্টারনেটে টিকিট বিক্রি হয়েছে স্বাভাবিক মূল্যেই৷
তাই অনেক ফুটবল ফ্যানই এ নিয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে৷ দূর্নীতির অভিযোগও আনা হয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে৷ কালো বাজারে বেশি অর্থের লোভে টিকিট ছাড়া হয়েছে – এমন অভিযোগ এসেছে৷ যে টিকিটের নির্ধারিত মূল্য ছিল ৪০ ডলার, সেসব টিকিট কালো বাজারে সাতশো থেকে সাড়ে সাতশো ডলারে বিক্রি হচ্ছে৷ এবং তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন মাথাব্যথা নেই৷
ইউক্রেনে সাধারণত একটি পরিবারের আয় তিনশো থেকে তিনশো ষাট ডলার৷ তাই চল্লিশ ডলার দিয়ে টিকিট কেনাও তাদের সামর্থ্যের বাইরে, বলছে অনেকেই৷
আসল কথা হল, কালো বাজারে ইউরো কাপের টিকিট বিক্রি করা নিষিদ্ধ করতে হবে৷ পোলিশ অর্গানাইজিং কমিটির ইউলিউস গ্লুস্কি জানান, ‘‘আমরা প্রতিটি অকশান সাইটে জানিয়েছি যে এ ধরণের কেনা-বেচা পুরোপুরি বন্ধ করতে, এসব কর্মকাণ্ড ব্লক করে দিতে৷''
তারপরও টিকিট বিক্রি হচ্ছে৷ সর্বোচ্চ টিকিটের দাম উঠেছে আট হাজার স্লটি৷ এবং তা করা হচ্ছে বেশ নাটকীয়ভাবে৷ বাস্তবে টিকিট ‘বিক্রি' করা হচ্ছে না৷ তা দেয়া হচ্ছে ‘বিনামূল্যে'৷ একটি শার্ট, টি শার্ট বা স্কার্ফ কিনলে খেলার টিকিট পাওয়া যাচ্ছে টাকা ছাড়াই৷ বলা বাহুল্য, সেই শার্ট বা স্কার্ফের দামই হচ্ছে আট হাজার স্লটি অর্থাৎ দুই হাজার তিনশো তিরাশি ডলার৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার (ডিপিএ)
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ