কিমের কাছে শি, ট্রাম্পের কাছে কী?
২০ জুন ২০১৯উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন সাম্প্রতিক কালে আন্তর্জাতিক মঞ্চে যথেষ্ট সমীহ আদায় করতে পেরেছেন৷ বেশ কয়েকবার চীন সফরের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একাধিক সাক্ষাতের ঘটনা কোরীয় উপদ্বীপে শান্তির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে৷ তাছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে দু-দুবার বৈঠক করায় তাঁর গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে৷ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ও কিম জন উন রাশিয়ায় মিলিত হয়েছেন৷ বিদেশের মাটিতে এই সব কূটনৈতিক সাফল্য সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া এখনো কার্যত একঘরে রয়ে গেছে৷ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে সে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে৷ ১৪ বছর পর খোদ পিয়ং ইয়ং শহরে চীনের প্রেসিডেন্টের সফর সে দেশের মানুষকে কিছুটা আশার আলো দেখাতে পারে, এমনটাই চেয়েছিলেন কিম জং উন৷
বৃহস্পতিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রাষ্ট্রীয় সফরে প্রথম বার উত্তর কোরিয়ায় পা রাখলেন৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ এক বড় প্রতিনিধিদলও তাঁর সঙ্গে এসেছে৷ উত্তর কোরিয়ার নেতার আমন্ত্রণে তিনি দুই দিন সে দেশে থাকবেন৷ রাষ্ট্র হিসেবে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে উত্তর কোরিয়া চীনের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল৷ কিন্তু কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রক্রিয়ায় অগ্রগতির অভাবে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা এখনো তুলে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ ফলে চীনও সে দেশকে পুরোপুরি সাহায্য করতে পারছে না৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভিয়েতনামে ট্রাম্প-কিম শীর্ষ বৈঠক ব্যর্থ হওয়ায় অচলবস্থা কাটছে না৷ এই অবস্থায় শি জিনপিং তাঁর সফরের মাধ্যমে কিছুটা অগ্রগতির চেষ্টা করছেন৷ আগামী ২৮শে জুন জাপানে জি-টোয়েন্টি শীর্ষ বৈঠকে তিনি ডনাল্ড ট্রাম্প-এর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন৷ পর পর কিম ও ট্রাম্প-এর সঙ্গে আলোচনার সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চান তিনি৷
ফেব্রুয়ারি মাসে বৈঠক ব্যর্থ হবার পর ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে তেমন আগ্রহ দেখান নি৷ তবে কিম জং উন সম্পর্কে তাঁর সম্পর্কের উষ্ণতা অটুট রয়েছে৷ গত সপ্তাহে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার নেতার কাছ থেকে ‘সুন্দর' ও ‘উষ্ণতা ভরা' একটি চিঠি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন৷ ট্রাম্প কিম জং উন-এর সঙ্গে তৃতীয় শীর্ষ বৈঠকের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন নি৷ বর্তমান জটিলতা কাটাতে ইতিবাচক কিছু ঘটতে চলেছে বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ চীনের প্রেসিডেন্ট সরাসরি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সেই সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছেন কিনা, সেই বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়৷
চীনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্য যুদ্ধও এই রসায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে৷ ট্রাম্প ও শি-র মধ্যে ব্যক্তিগত সুসম্পর্কও এই সংঘাত এড়াতে সাহায্য করে নি৷ উত্তর কোরিয়ার উপর নিজস্ব প্রভাবের মাত্রা তুলে ধরে বেইজিং ওয়াশিংটনকে সে দেশের উপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ সম্পর্কে সতর্ক করে দিতে পারে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)