1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হ্যানয় বৈঠক ব্যর্থ হলেও সংলাপ চালু থাকবে

১ মার্চ ২০১৯

ট্রাম্প-কিম দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠক বিফল হওয়া সত্ত্বেও দুই পক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার করেছে৷ দক্ষিণ কোরিয়া সেই সংলাপ তরান্বিত করতে সর্বশক্তি প্রয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3EI0n
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন
ছবি: Reuters/K. Hong-Ji

ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় শহরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন-এর দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠক কোনো ইতিবাচক ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়েছে৷ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ও তার বদলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে দুই পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি৷ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য উত্তর কোরিয়ার নেতা সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করেন নি৷ বরং সে দেশের অবস্থানের প্রতি কিছুটা সহানুভূতি দেখিয়ে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন৷ তাঁর মতে, আলোচনায় অগ্রগতি সত্ত্বেও তড়িঘড়ি করে কোনো খারাপ চুক্তি স্বাক্ষর করার প্রয়োজন ছিল না৷ ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়া সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রত্যাশা করেছিল৷ তাই তিনি এ যাত্রায় বৈঠক শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং হো অবশ্য ট্রাম্পের এই মূল্যায়ন নস্যাৎ করে দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, দেশের নাগরিকদের জীবনযাত্রার উন্নতির লক্ষ্যে তাঁর দেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল৷ সামরিক ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো অনুরোধ করা হয়নি৷ এর বদলে ইয়ংবিয়ন পরমাণু স্থাপনা পুরোপুরি নষ্ট করার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল৷ এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর উত্তর কোরিয়ার নেতা চুক্তির আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন বলে সতর্ক করে দিয়েছেন সে দেশের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ তবে আলোচনা বিফল হবার কারণ নিয়ে বিভ্রান্তি সত্ত্বেও ট্রাম্প সম্পর্কে কোনো বিরূপ মন্তব্য করেনি উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম৷ শুক্রবার সে দেশ অ্যামেরিকার সঙ্গে আরও আলোচনার অঙ্গীকার করেছে৷

এমন পরিস্থিতি সত্ত্বেও কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যেতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া৷ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমাজের বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে উন এতকাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছেন৷ শুক্রবার তিনি বলেন, তাঁর প্রশাসন অ্যামেরিকা ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে আলোচনা তরান্বিত করতে দুই পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা চালিয়ে যাবে৷ যে-কোনো মূল্যে তিনি এক সার্বিক চুক্তি সম্ভব করতে চান৷ তাছাড়া উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ অর্থনৈতিক প্রকল্প আবার চালু করতে চান প্রেসিডেন্ট মুন৷ উল্লেখ্য, দেশে ফেরার পথে ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন৷ মুন এ প্রসঙ্গে বলেন, যে ট্রাম্পের প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে৷ তিনি মনে করিয়ে দেন, যে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার করেছেন৷

ট্রাম্প-কিম শীর্ষ বৈঠকের পর উত্তর কোরিয়া ও অ্যামেরিকার মধ্যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে নানা রকম মূল্যায়ন শোনা যাচ্ছে৷ দুই পক্ষই কোনো বিরূপ মন্তব্য ছাড়া পরস্পরের প্রতি সৌজন্য দেখিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবার যে অঙ্গীকার করেছে, সেই মনোভাবকে ইতিবাচক হিসেবে গণ্য করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ৷ তবে এত বড় আকারের কর্মযজ্ঞের আগে দুই পক্ষের প্রস্তুতির অভাবের সমালোচনা করেছেন অনেকে৷ তাঁদের মতে, ঐকমত্য অর্জন করে তারপর শীর্ষ বৈঠক আয়োজন করলে দুই নেতাকে খালি হাতে দেশে ফিরতে হতো না৷ ট্রাম্প তাঁর স্বভাবসিদ্ধ চমকের তোয়াক্কা না করে আলোচনায় শেষ পর্যন্ত কোনো ছাড় দেননি৷ এই বিষয়টিকেও ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে৷

এসবি/জেডএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ, এএফপি)