কিশোরী হত্যাকারী শরণার্থীর সাড়ে আট বছরের জেল
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির লানডাউ শহরের আদালত আবদুল ডি. নামের এক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে এ দণ্ড দিয়েছে৷ গত বছর কানডেল শহরের এক কিশোরীকে হত্যার দায়ে তাকে এ দণ্ড দেয়া হলো৷ আবদুলের পূর্ণ পরিচয় নিশ্চিত হওয়া না গেলেও ধারণা করা হয় তিনি আফগানিস্তান থেকে এসেছেন৷
এই মামলা জার্মানিতে সবার আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল৷ রায় ঘোষণার সময় মিডিয়াকর্মীদের উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের অভিবাসন নীতির বিরোধীরা স্বভাবতই এই সুযোগ লুফে নিয়েছে৷
আবদুল ডি'র আইনজীবী মাক্সিমিলিয়ান এনডের সাংবাদিকদের জানান, আদালতের রায় সঠিক হয়েছে, তাঁর মক্কেলও রায় ‘মেনে নিয়েছেন'৷
তবে এই রায়ে খুশি হননি অনেকেই৷ ৫৩ বছর বয়সি মার্টিন ম্যুলার ডয়চে ভেলেকে জানান, রেডিওতে রায়ের খবর শুনে তিনি ‘স্বতস্ফূর্তভাবেই' আদালতের সামনে হাজির হয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনি জানেন কোন অপরাধের কী শাস্তি হওয়া উচিত৷ সাড়ে আট বছর যথেষ্ট না৷''
ক্রিস্টোফ হ্যুকস্ট্যাড্ট নামের আরেকজন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি এটা ঠিক মনে করি না৷ তাকে অন্তত ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া উচিত ছিল৷ এটা একটা খুন৷''
ঈর্ষান্বিত হয়ে হত্যা
১৫ বছরের মিয়া ভি-কে এক ড্রাগস্টোরে তাঁর তখনকার বয়ফ্রেন্ড আবদুল ডি কুপিয়ে হত্যা করে৷ ২০ সেন্টিমিটার লম্বা ধারালো ছুরি দিয়ে মিয়া-কে সাত বার কোপ দেয়া হয়৷
কয়েক মাসের সম্পর্কের পর গত বছরের ডিসেম্বরে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়৷ কিন্তু আবদুল এ বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি৷ বিচ্ছেদের পরপরই মিয়া এবং তাঁর বাবা-মা পুলিশকে জানান, আবদুল নানাভাবে তাঁদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে৷ তদন্তকারীদের ধারণা, সম্পর্ক ভেঙে ফেলায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন আবদুল৷
২০১৬ সালের বসন্তে জার্মানিতে প্রবেশ করেন আবদুল এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে নিবন্ধন করান৷ কর্তৃপক্ষের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের সময়ও আবদুল অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন৷ জার্মানিতে হত্যার দায়ে অপ্রাপ্তবয়স্কদের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের জেল৷
অবশ্য আবদুলের বয়স আরো বেশি বলে মনে করেন তদন্তকারীরা৷ আবদুল নিজের বয়স ১৫ বছর দাবি করলেও, বিশেষজ্ঞ মেডিকেল রিপোর্ট বলছে, তার বয়স ১৭ থেকে ২০ বছরের মাঝামাঝি৷ তবে শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাকে অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবেই ধরে নিয়েছে আদালত৷
রেবেকা স্টাউডেনমায়ার/এডিকে