কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে জনপ্রিয় গান সৃষ্টি
২৫ মে ২০২১যে সংগীত শুনে গায়ে কাঁটা দেয়, এখনো পর্যন্ত সেটির ক্ষেত্রেও নিশ্চিত কোনো ফর্মুলা পাওয়া যায়নি৷ গবেষক হিসেবে ইয়ুলিয়া ব্রিশটেল গান শোনার সময় শ্রোতার ত্বকের পরিবাহিতা পরিমাপ করেছেন৷ সেই প্রক্রিয়ায় মানসিক চাপ বা ইতিবাচক আবেগ চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছে৷ একটি গান তার মধ্যে এমন আবেগ জাগিয়ে তোলে৷ ব্রিশটেল মনে করেন, সেই গানে নারীকণ্ঠের সঙ্গে সুরের এমন সংযোগ রয়েছে, তা তার হৃদয় ছুঁয়ে যায়, সেই সৌন্দর্য্য গভীরভাবে নাড়া দেয়৷ সিগন্যালের মধ্যেও সেই প্রতিক্রিয়া দেখা যায়৷
এমন অনুভূতি কি শুধু তার একারই হয়? বড় আকারে পরিমাপ চালিয়ে লার্নিং সফটওয়্যারের জন্য এমন তথ্য সংগ্রহ করা যায়, যা বেশিরভাগ মানুষের আবেগের চাবিকাঠি৷
একটি ফর্মুলায় বেশ কাজ হয়৷ সফল সংগীত নতুন করে সাজালেও মানুষের তা পছন্দ হয়৷ আজকাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই সেই কাজ সারতে পারে৷ ২০১৬ সালের গান ‘ড্যাডিস কার' প্রথম এআই কম্পোজিশন৷ কম্পিউটারকে বিটলস গোষ্ঠীর ৪৫টি গানের ভিত্তিতে নতুন কিছু সৃষ্টি করার কাজও দেওয়া হয়েছিল৷ সর্বাধুনিক আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স সফটওয়্যার এমনকি পুরানো হিট গানও স্থায়ীভাবে পরিবর্তন করতে পারে৷ তবে একটি কারণে নতুন হিট সৃষ্টি এখনো সম্ভব নয়৷
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষক হিসেবে ড. স্টেফান বাউমান সেই কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘ব্যর্থ প্রেম, মানসিক অবসাদ, মাদকে আসক্তি বা প্রবল উৎসাহের সময় কত গান লেখা হয়েছে৷ যন্ত্রের তো আর ঘাম হয় না! বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেই সেটি কাজ করে৷ কম্পিউটারের নশ্বরতার বোধ নেই৷ সেটি চলতেই থাকে৷''
এআই বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তিনি নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েন৷ তার মতে, খাঁটি হিট গানের নিজস্বতা থাকতে হবে, হৃদয় স্পর্শ করতে হবে৷ অথচ স্পটিফাই পরিষেবার অ্যালগোরিদম দেখিয়ে দিচ্ছে যে, হিট পপ গানগুলির মধ্যে মিল বেড়েই চলেছে৷ অর্থাৎ সাফল্য এলে সেই ধারাই বার বার নকল করা হচ্ছে৷
যে সব প্রোডিউসার অনেক তারকার জন্য কাজ করেন, তারাও তাদের সেই স্টাইল বার বার সৃষ্টি করছেন৷ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও প্রত্যাশার এই চক্র আরো শক্তিশালী করে তুলবে৷
নিখুঁত হিট পপ গানের প্রণালী অবশ্য বাস্তব হয়ে উঠতে পারে৷ তবে সংখ্যাগুরু মানুষের পছন্দ সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে সেই গান ভীষণই বোরিং বা বিরক্তিকর লাগতে পারে৷
অলিভার ভিটকভস্কি/এসবি