1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে তুলে নেয়ার অভিযোগ

২৬ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম সহ তিনজনকে তুলে নেয়ার খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। রাজধানীর গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে বিকেলে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের তুলে নিয়ে যায় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/4ilVs
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images

বাকি দু’জন হলেন, আসিফ মাহমুদ এবং আবু বকর মজুমদার৷  নাহিদের বড় বোন ফাতেমা তাসনিম এএফপিকে জানান, সাদা পোশাক পরা গোয়েন্দা সংস্থার ছয় ব্যক্তি তাদের তিনজনকে তুলে নিয়ে যায়৷ 

এএফপির খবরে আরো বলা হয়, গত কয়েক দিন ধরে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তারা। ছিলেন নজরদারিতে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই তাদের সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেয়া হয়নি। নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ এর আগেও তাদের তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন।  

বিটিভি পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী

এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে হামলা-আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভি ভবন পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, "যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, সারা বাংলাদেশের আনাচকানাচে যে যেখানে আছে, তাদের খুঁজে বের করুন।"

শুক্রবার কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে হামলা-আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভি ভবন পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷

এসময় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তার কাছে তুলে ধরেন বিটিভির মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা৷

পরিদর্শন শেষে মেট্রোরেল, বিটিভিসব নানা স্থাপনায় হামলার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন,  ‘‘যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, সারা বাংলাদেশের আনাচকানাচে যে যেখানে আছে, তাদের খুঁজে বের করুন। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সহযোগিতা করুন। আমি দেশবাসীর কাছে এই আহ্বান জানাচ্ছি।’’

২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনে আগুন দেয়া ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রসঙ্গও টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী। তবে আগের বারের চেয়ে এবারের ঘটনা অনেকটাই ভিন্ন বলেও মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, "তারা এবার আগুন লাগাতে গানপাউডার ব্যবহার করেছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।"

শেখ হাসিনা আরও বলেন, "পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কিন্তু টেলিভিশনের ওপর হাত দেয়নি বা কেউই কখনো দেয়নি। কিন্তু আজকে এই টেলিভিশন সেন্টারকে যারা এইভাবে পোড়াল, একটা কিছু নেই যে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাহলে এরা কারা? এরা কি এ দেশেরই মানুষ? এদের কি এই দেশেই জন্ম? একটা দেশকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার চিন্তা নিয়েই যেন তাদের এই আক্রমণ।"

জীবনের ঝুঁকি নিয়েও বিটিভিকে রক্ষার চেষ্টা করায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

বিটিভির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হামলায় বিটিভির বিভিন্ন অবকাঠামো, সম্প্রচার সরঞ্জাম, নকশা বিভাগ, অফিস ভবন ও কক্ষ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ১৯৬৪ সাল থেকে সংরক্ষিত প্রাচীন জিনিস দিয়ে সজ্জিত একটি টেলিভিশন জাদুঘরও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷

১৮ জুলাই বিকেলে বিটিভি ভবনের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন একদল মানুষ। শুরুতে সেখানে পার্ক করা কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। পরে বিটিভি ভবনের ভেতরে গিয়ে বিভিন্ন ফ্লোরের বিভিন্ন অংশে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

সেদিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিটিভি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ - বিজিবি।

সাধারণের মৃত্যুর দায় জামায়াত-শিবিরের: ওবায়দুল কাদের

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় সাধারণ মানুষের প্রাণহানির জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের৷ পুলিশ এবং সাধারণ মানুষ কোনো হত্যায় অংশ নিতে পারে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি৷

প্রথম আলো জানিয়েছে, ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের৷

সহিংসতায় কতজন মারা গিয়েছেন, এমন তথ্য সরকারের কাছে আছে কীনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ''পত্রপত্রিকায় দুই শর মতো বা দুই শর চেয়ে একটু বেশি৷ আমরা এটার খোঁজখবর নিচ্ছি৷''

অনেক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে গুলিতে, জামায়াত কি অস্ত্র ব্যবহার করছিল কীনা, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ''অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছেন। জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্যপট দেখতে ছিল...বাচ্চা যখন তাকাল, সেই বাচ্চা গুলি খেয়ে মারা গেল। তারপরে এ ধরনের ঘটনা আরও অনেক ঘটেছে৷ রাস্তায় বেরিয়েছে, নিষ্পাপ, নির্বোধ শিশু, কিছুক্ষণ পর দেখা গেল সে–ও লাশ হয়ে পড়ে ছিল৷ এ রকম ঘটনা অনেক আছে৷ এগুলো জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব৷ আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি৷ সাংবাদিকেরাও নিচ্ছেন৷ সব সত্য বেরিয়ে আসবে৷''

রেমিট্যান্স ব্যাহত

পাঁচ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যাংক ও মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) এর মাধ্যমে রেমিট্যান্স সংগ্রহে প্রভাব পড়েছে৷ এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷

ব্যাংকার ও এমএফএস প্রোভাইডারদের বরাত দিয়ে দ্য ডেইলি স্টার জানিয়েছে, ১৮ জুলাই থেকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় রেমিট্যান্স সংগ্রহ বন্ধ ছিল৷ এরপর সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালুর পর আবার রেমিট্যান্স আসা শুরু হয়। কিন্তু  তারপরও রেমিট্যান্স সংগ্রহ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম৷

স্বাভাবিক সময়ে দিনে প্রায় আট থেকে ১০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স বাংলাদেশে আসে৷ ১ জুলাই থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৭ কোটি ডলার৷

এখনও অবশ্য এর পরের সপ্তাহগুলোর তথ্য পুরোপুরি পাওয়া যায়নি৷ প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণে করে দেখা যাচ্ছে, পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে রেমিট্যান্স অর্ধেকেরও নীচে নেমে আসতে পারে৷

এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার ডেইলি স্টার জানিয়েছে, তার প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক অবস্থায় দিনে পাঁচ থেকে সাত কোটি টাকা রেমিট্যান্স পেলেও, ইন্টারনেট সংযোগের ধীরগতির কারণে তা ৮০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে৷

হাসপাতালে গোয়েন্দা নজরদারিতে সমন্বয়কেরা

ডেইলি স্টার জানিয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, সেখানে কঠোর নজরদারি রয়েছে৷ সাংবাদিকদের সঙ্গে তাদের কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না৷

চার দিনের আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার তাদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল। হাসপাতাল থেকেই এই ঘোষণা দেয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, বৃহস্পতিবারই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন সদস্য হাসপাতালে গিয়ে দুই সমন্বয়কের কেবিনের টেলিফোন ও ওয়াইফাই লাইন কেটে দেন৷

এরপর ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক হাসপাতালে তাদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও তাকে কেবিন দুটোতে ঢুকতে দেয়া হয়নি৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাদা পোশাক পরিহিত দুই ব্যক্তি নিজেদের গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে জানিয়েছেন, ''এই দুটি কেবিনে প্রবেশ নিষেধ। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নির্দেশনা আছে।''

এডিকে/এসিবি (প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান