নতুন খতনা আইন
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১২গত জুন মাসে কোলন শহরের একটি আদালত ঐ অঞ্চলের কিশোরদের খতনা করা যাবে না বলে রায় দেয়৷ তবে বড়দের তাদের অনুমতি নিয়ে মুসলমানি করানো যাবে বলেও জানিয়েছিল আদালত৷
এই রায় নিয়ে পরবর্তীতে শুরু হয় বিতর্ক৷ কেননা জার্মানিতে প্রায় চল্লিশ লক্ষ মুসলমানের বাস৷ এছাড়া রয়েছে প্রায় এক লক্ষ বিশ হাজার নিবন্ধনকৃত ইহুদি৷ মুসলমানদের পাশাপাশি ইহুদিদের মধ্যেও খতনা বিষয়টি প্রচলিত৷
সাবেক নাৎসি আমলে ইহুদি নিধনের কারণে বর্তমানে জার্মানিতে ইহুদি সংক্রান্ত যে কোনো কিছুই বেশ স্পর্শকাতর৷ তাই ঐ রায়ের পর চ্যান্সেলর ম্যার্কেল বলেন, জার্মানিতে যদি ইহুদিদের তাদের ধর্মীয় রীতি পালন করতে দেয়া না হয় তাহলে বাইরের বিশ্বের কাছে জার্মানি হাসির পাত্রে পরিণত হবে৷
বলা বাহুল্য, জার্মানিতে বসবাসরত অনেক মুসলমানের মধ্যেও কোলন আদালতের ঐ রায় নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল৷
তবে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে জার্মান সরকার খতনাকে বৈধ দিতে তড়িঘড়ি করে একটি আইনের খসড়া তৈরি করেছে৷ সেটা বিভিন্ন রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানোও হয়েছে৷ এ সপ্তাহেই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সম্ভাব্য আইনের খসড়াটি নিয়ে আলোচনা হবে৷ আর তারপর সেটা পাসের ব্যবস্থা করা হবে৷
আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে চিকিৎসকরা শিশুদের খতনা করাতে পারবেন৷ অবশ্য ছয়মাসের কম বয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে ‘মোহেল'দের দিয়েও খতনা করানো যেতে পারে৷ উল্লেখ্য, মোহেল হচ্ছেন ইহুদি মতে, খতনা করানোয় বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক ব্যক্তি৷
খতনা শুরুর আগে সর্বোচ্চ ব্যথানাশক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে আইনের ঐ খসড়ায়৷ এছাড়া কী প্রক্রিয়ায় খতনা করা হবে, সে সম্পর্কে শিশুর বাবা-মাকে বিস্তারিত জানাতে হবে৷
জার্মানির বিচার মন্ত্রণালয় এই খসড়াটি তৈরি করেছে৷ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে বাবা-মার যে সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে সেটা লক্ষ্য রেখে খসড়াটি তৈরি করা হয়েছে৷ এছাড়া এ সংক্রান্ত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে৷
জেডএইচ/ডিজি (রয়টার্স)