‘গণতন্ত্র ছাড়া বাংলাদেশের জন্য আর কোনো সমাধান নেই’
৬ নভেম্বর ২০১৫নেদারল্যান্ডসে তিন দিনের সরকারি সফরের শেষ দিন বৃহস্পতিবার দ্য হেগের কুরহাউস হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘সকল ষড়যন্ত্র কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে৷ সামরিক স্বৈরশাসক ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি নানা ষড়যন্ত্র করে চলেছে এরপরও এ দেশের মানুষ যখনই সুযোগ পেয়েছে, মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশকে এখন আর কেউ উপেক্ষা করতে পারছে না৷ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনের পথ থেকে কোনো ষড়যন্ত্রই দেশকে বিচ্যুত করতে পারবে না৷''
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য ধরে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যতই আশাবাদ ব্যক্ত করুন না কেন, দেশে যেভাবে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে তাতে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে৷ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ টিকে থাকলে দেশের অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাবে৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমি যদি ধরেও নিই যে সরকার জঙ্গি দমনে আন্তরিক, তাহলে বলতে হয় আন্তরিকতা থাকলেও সরকারের দক্ষতা নাই৷ পুলিশ বাহিনীর দক্ষতা নাই৷ দুইজন দুর্বৃত্ত কীভাবে পাঁচজন সশস্ত্র পুলিশকে কুপোকাত করে এটাই এখন বড় প্রশ্ন৷''
তিনি বলে, ‘‘একের পর এক ব্লগার হত্যা হচ্ছে, প্রকাশকদের ওপর হামলা হচ্ছে, তাদের হত্যা করা হচ্ছে, বিদেশিদের হত্যা, আশুরার মিছিলে বোমা – এসব খারাপ পরিস্থিতির কথাই বলে৷ সরকার যদি মনে করে এর সঙ্গে বিএনপি-জামাত জড়িত তাহলে তা প্রমাণ করুক ৷ অযথা বিরোধী রাজনৈতিক দলকে দায়ী করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবেনা৷ আরো ঘোলাটে হবে৷''
হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ‘‘হয় সরকার জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে এক ধরনের ব্যালান্স করছে, অথবা তাদের সঙ্গে পেরে উঠছে না৷''
তিনি বলেন, ‘‘দোষারোপের রাজনীতি বাদ দিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা চালু করতে হবে৷ কাউকে বাদ দিয়ে নয়, সবাইকে নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে৷ দেশে এখন যে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে প্রয়োজন জাতীয় ঐকমত্য এবং সর্বদলীয় উদ্যোগ৷ গণতন্ত্র ছাড়া বাংলাদেশের জন্য আর কোন সমাধান নেই৷ উন্নয়ন হয় সবাইকে নিয়ে৷ আর সেটা হলে বাংলাদেশ সত্যিই এগিয়ে যাবে৷''