হুমকির মুখে বই, বইমেলা
৩ নভেম্বর ২০১৫প্রকাশনা সংস্থা মুক্তচিন্তার কর্ণধার শিহাব বাহাদুর ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নিহত দীপন এবং আহত টুটুল আমার বন্ধু৷ আজিজ সুপার মার্কেটে আমরা পাশাপাশি বই প্রকাশনার ব্যবসা করি দীর্ঘদিন ধরে৷ এই ঘটনার পর এখন আর অফিসে যাই না, ভয়ে আছি৷''
তাঁর কথায়, ‘‘সামনের বইমেলার কাজ আমরা আগেই শুরু করেছি৷ পান্ডুলিপি বাছাই করছি৷ নতুন পান্ডুলিপি আসছে৷ কিন্তু এখন চিন্তায় আছি কার বই প্রকাশ করে আবার বিপদে পড়ি৷ আমরা বিবেচনা করি ভালো বই, মুক্তচিন্তার ইস্যুগুলো নিয়ে৷ কিন্তু মুক্তচিন্তার ওপর তো আঘাত আসছে৷ এ কারণে এবার বইমেলা নিয়ে সংশয়ে আছি৷ কী বই প্রকাশ করতে পারবো? আদৌ পারবে কিনা জানি না৷''
সংহতি প্রকাশনের কর্ণধার দীপক রায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সন্ত্রাসীরা হত্যার মধ্য দিয়ে যদি বলতে চায়, কোন বই প্রকাশ করা যাবে আর কোন বই প্রকাশ করা যাবে না, তাহলে তো আমাদের হাত-পা বেঁধে দেয়া হলো৷ আমরা এই অবস্থা মেনে নিতে পারি না৷ প্রকাশক শুধু নয়, এর আগে লেখক-ব্লগারদের হত্যা করা হয়েছে৷ তাই এটা স্পষ্ট যে বই, মুক্তচিন্তা করেন যাঁরা, লেখক-প্রকাশক সবাই এখন চাপাতির নীচে৷ এটা চলতে পারে না৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘নিরাপত্তার বিষয়ে সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে৷ তবে আমাদেরও প্রতিবাদী হতে হবে৷ আমাদেরও মাঠে নামতে হবে৷ ঘরে বসে থাকলে চলবে না৷''
তাঁর কথায়, ‘‘অমর একুশের বইমেলাকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশে অধিকাংশ সৃজনশীল বই প্রকাশ হয়৷ কিন্তু সৃজনশীল প্রকাশকরা হামলা বা হত্যার শিকার হওয়ায় এবার বইমেলার কী হবে, তা নিয়ে শঙ্কায় আছি৷''
এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘‘ব্লগার হত্যার বিচারে শৈথিল্য কেন? – এ নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন আছে৷ প্রশানের মধ্যে ধর্মান্ধ লুকিয়ে আছে কিনা, যদি থাকে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে৷ ব্লগার হত্যার বিচার হলে প্রশাকরা হত্যার শিকার হতেন না৷''
ড. মিজান বলেন, ‘‘ব্লগার অভিজিৎ, ওয়াশিকুরের বাবা কি ছেলে হত্যার বিচার চাননি? তাঁরা যদি বিচার পেতেন, তাহলে দীপনের বাবা আজ আক্ষেপ করে ‘বিচার চাই না' – এ কথা বলতেন না৷ এটা তখনই হয় যখন বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা তৈরি হয়৷''
ব্লগার হত্যার বিচার হলে প্রশাকরা হত্যার শিকার হতেন না – সত্যিই কি তাই? আপনার মন্তব্য জানতে চাই৷ লিখুন নীচের ঘরে৷