বিএনপির কর্মসূচি
১৫ জানুয়ারি ২০১৪
ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘দেশের মানুষ ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন মেনে নেয়নি৷ এই নির্বাচনে সরকারের আজ্ঞাবহ কয়েকটি দল অংশ নিয়েছে৷ নির্বাচনে ১৫৩টি আসনে কোনো ভোটই হয়নি৷ সেই আসনগুলিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রার্থীরা৷ আর বাকি আসনের নির্বাচনে ৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি৷ অথচ জালিয়াতি করে ৪০ শতাংশ ভোট দেখানো হয়েছে৷ তাই এই নির্বাচন দেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে৷ এই সরকার জনগণের অনুমোদনহীন গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠিত অবৈধ সরকার৷''
তিনি বলেন, ‘‘সরকার শুধু গণতন্ত্র হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, দেশের রাজনীতিও কলুষিত করেছে৷ জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে৷ এছাড়া, এই নির্বাচন দেশে-বিদেশে কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়নি৷''
খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘সরকার যতই চেষ্টা করুক গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না৷ জনগণ এই সরকারকে চায় না৷'' তিনি দেশবাসীকে এই ‘প্রহসনের' নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘‘দেশবাসী অচিরেই ভোটের অধিকার ফিরে পাবে৷''
বিএনপির চেয়ারপার্সন বলেন, তাদের আন্দোলন ক্ষমতার জন্য নয়, গণতন্ত্রের জন্য৷ ন্যায়, সত্য এবং গণতন্ত্রের এই আন্দোলনে বিজয় অনিবার্য৷ প্রহসনের নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করায় প্রথম ধাপের বিজয় অর্জিত হয়েছে৷ খালেদা জিয়ার কথায়, ‘‘আমরা সহিংসতায় বিশ্বাস করি না৷ আমারা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব৷''
তিনি বলেন, ‘‘৫ই জানুয়ারির ভোটারবিহীন র্নিবাচন প্রমাণ করেছে যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার৷ আমরা বার বার সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছি৷ রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়ে ঐক্য গড়ে তোলার কথা বলেছি৷ কিন্তু সরকার সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি৷ আমরা তাদের আবারও আলোচনা এবং সমঝোতার আহ্বান জানাচ্ছি৷''
খালেদা জিয়া সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘‘এই হামলা এবং নির্যাতনের সঙ্গে শাসক দলের লোকেরা জড়িত বলে জেনেছি৷ কিন্তু বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানোর জন্য নানা রকম অপপ্রচার চালানো হচ্ছে৷'' তিনি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নির্যাতনে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দেয়ার আহ্বান জানান৷
খালেদা জিয়া প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২০শে জানুয়ারি সারা দেশে গণসমাবেশ ও ঢাকার সোহরাওয়ার্দি ১৮ দলের সমাবেশ এবং ২৯শে জানুয়ারি সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন সারা দেশে বিক্ষোভ দিবস ও শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন৷ এ সব ছাড়া, ১৮ই জানুয়ারি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীও পালন করবে দলটি৷
খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের আগে ৫ই জানুয়ারির ‘একতরফা' নির্বাচন নিয়ে একটি প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়৷ ৪৫ মিনিটের এই প্রামাণ্য চিত্রটি এর আগে ঢাকায় কূটনীতিকদের দেখান হয়েছিল বলে খবর৷