গরিবের ঘাড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বোঝা
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯বাংলাদেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ বববাস করে৷ ঘনবসতির এই দেশের উপকূলীয় গ্রামগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ঝুঁকিতে রয়েছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জন্য গ্রামীণ পরিবারগুলোকে বছরে গড়ে দুই বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে৷
আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও উন্নয়ন সংস্থা (আইআইইডি)-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল এক দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার৷ এ সময় এই খাতে আন্তর্জাতিক অর্থায়নের পরিমাণ ছিল বছরে ১৫৪ মিলিয়ন ডলার৷
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের জলবায়ু অ্যাকশন সামিটের কয়েক দিন আগে গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়৷ আইআইইডির পরিচালক অ্যান্ড্রু নর্টন এক বিবৃতিতে বলেন, এই গবেষণাটি উদ্বেগজনক ভারসাম্যহীনতা প্রকাশ করে৷
‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে বাংলাদেশের দরিদ্র মানষুদের ব্যয়ের বোঝা কাঁধে নিতে হচ্ছে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়৷ যেসব পরিবারের মানুষের কাছে জলবায়ু তহবিলের অর্থ পৌঁছানোর কথা তা ঠিকমতো তাদের কাছে যাচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেয়া দরকার৷''
প্রতিবদনে বলা হয়েছে, অনেক পরিবারকে খাদ্য কেনার পরিবর্তে বা স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় ব্যয় না করে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর মেরামত এবং প্রাণী ও ফসল উৎপাদেনে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে৷
তারা এই অর্থ তাদের ঘরগুলো বন্যার স্তরের ওপরে তুলতে ব্যবহার করছিল এবং কেউ কেউ অনানুষ্ঠানিক উৎস থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়েছিল, যা তাদের আরো দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেয় বলে গবেষণায় বলা হয়েছে৷
মোহাম্মদ নান্নুর বাড়ি গত বছর পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে৷ ৫০ বছর বয়সি এই ব্যক্তি এএফপিকে বলেন, ওই দুর্যোগের পর তিনি ২০ শতাংশেরও বেশি সুদে ঋণ নিয়েছিলেন৷ নদী ভাঙনের মতো বিষয়গুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন৷
‘‘পদ্মা আমাদের পুরো গ্রামকে গ্রাস করেছিল, আমি আমার বাড়ি হারাই এবং সে সময় আমার কাছে কোনো অর্থ ছিল না৷''
স্থানীয় মেয়র শহীদুল ইসলাম জানান, পদ্মার ভাঙনের পর কয়েকটি পরিবারকে নতুন বাড়ি দেওয়া হয়েছিল৷ এছাড়া কয়েকশ মানুষ বাড়ি ভাড়া নেয় এবং অনেককে শহরে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছিল৷
এসআই/এসিবি (এএফপি)