‘গুন্ডে’ সংশোধনের দাবি
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ভারতে মুক্তি পায় হিন্দি ছবি গুন্ডে৷ এতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ভারত ও পাকিস্তানের তৃতীয় যুদ্ধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে৷ শুরুতে ভারতীয় অভিনেতা ইরফান খানের কণ্ঠে হিন্দিতে বলা হয় ‘‘১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১, শেষ হলো ভারত পাকিস্তানের তৃতীয় যুদ্ধ৷ সেদিন ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে প্রায় ৯০ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করে৷ এই যুদ্ধের ফলে জন্ম নিল নতুন একটি দেশ, বাংলাদেশ৷''
আর এই বক্তব্য নিয়েই বাংলাদেশে প্রতিবাদ হচ্ছে৷ প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষ৷ বাংলাদেশের আগ্রহীরা নানা মাধ্যম থেকে এরইমধ্যে সিনেমাটি দেখেছেন৷ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান আমরা স্বীকার করি৷ তাই বলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি মেনে নেয়া যায় না৷'' তিনি বলেন, ‘‘যারা সিনেমাটি বানিয়েছেন এজন্য শুধু তারাই দায়ী নন, ভারতীয় সেন্সর বোর্ডও এর দায় এড়াতে পারে না৷ কারণ তারা দেখার পরও কিভাবে এই ইতিহাস বিকৃতিকে অনুমোদন দিলেন?'' তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তাহলে জেনে শুনেই কি ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে?''
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা ভারতের যশরাজ ফিল্মস এরই মধ্যে তাদের ব্লগের মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করেছে৷ আর বলেছে সিনেমাটি কাল্পনিক৷ এর জবাবে বাংলাদেশের আরেকজন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোর্শেদুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কোনো জাতির স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিকৃত কল্পনার সুযোগ নেই৷ আর এজন্য দুঃখ প্রকাশ যথেষ্ট নয়৷'' তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত এই সিনেমার বিতর্কিত অংশ সংশোধন করতে হবে৷ আর সংশোধনের আগ পর্যন্ত এর প্রদর্শনও বন্ধ রাখতে হবে৷'' এজন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান৷
এদিকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ভারতীয় সিনেমায় বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতির যে ঘটনা ঘটেছে, তা সংশোধনে বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে৷
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে৷ গুন্ডে সিনেমায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ সাইবার আর্মি' ভারতের ৫০টিরও বেশি ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে বলে জানা গেছে৷