1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তদন্তের কেন্দ্রে তামিম ও জিয়া

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৩ আগস্ট ২০১৬

গুলশান আর শোলকিয়া হামলার মূল হোতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে তামিম চৌধুরী ও বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হককে চিহ্নিত করেছে তদন্তকারীরা৷ তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে ৪০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণাও করা হয়েছে৷ কিন্তু এটাই কি যথেষ্ট?

https://p.dw.com/p/1JasR
বাংলাদেশের পুলিশ
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/Z. Chowdhury

তামিম চৌধুরী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ক্যানাডিয়ান নাগরিক৷ বাংলাদেশে জেএমবির যে ভগ্নাংশটি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস অনুসারী হয়ে জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তার নেতৃত্ব দিচ্ছে সে৷ ধারণা করা হচ্ছে, দু'বছর আগে ক্যানাডা থেকে বাংলাদেশে আসে তামিম৷ কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ন'জন নিহত হওয়ার পর পুলিশ যে মামলা করেছে, তাতে বলা হয়েছে যে ঐ আস্তানায় তামিম চৌধুরী নিয়মিত আসা-যাওয়া করত৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ‘‘গুলশানে হামলাকারীরা এবং কল্যাণপুরের জঙ্গিরা একই গ্রুপের সদস্য৷ গুলশান হামলার পরিকল্পনাও ছিল তামিম চৌধুরীর৷'' ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, ‘‘তামিম চৌধুরী বর্তমানে জেএমবির একাংশের নেতৃত্বদানকারীদের একজন৷ সে দেশেই আত্মগোপন করে রয়েছে বলে তথ্য আছে৷ এ মুহূর্তে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে৷''

এদিকে মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক সেনাবাহিনীতে থাকা অবস্থাতেই জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন৷ ২০১১ সালে কয়েকজন সহকর্মী নিয়ে অভ্যূত্থানের চেষ্টাও করেন জিয়া৷ তবে ১১ই ডিসেম্বর ব্যর্থ অভ্যূত্থানের চেষ্টা করে পালিয়ে যান তিনি৷

আবদুর রশীদ

শোনা যায়, তাকে ধরার জন্য বিভিন্ন সময়ে অভিযানও চালানো হয়৷ কিন্তু আত্মগোপনে থেকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) আধ্যাত্মিক নেতা শাইখ জসিমউদ্দিন রাহমানীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি৷ ধীরে ধীরে জিয়া আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা হয়ে ওঠেন৷ সামরিক শাখার দায়িত্ব নেন৷ এরপর থেকেই ধারাবাহিকভাবে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম কিলিং মিশন শুরু করে৷ গত বছর ঢাকার একাধিক ব্লগার ও লেখক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে জিয়ার সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা জানতে পারেন৷

পুলিশের দাবি, ‘‘জেএমবির একাংশ এখন ‘নিউ জেএমবি' গঠন করেছে৷ তারাই গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার সঙ্গে জড়িত৷ কল্যাণপুরের জঙ্গিরাও এই গ্রুপের সদস্য৷ তামিম চৌধুরীর সঙ্গে মেজর জিয়াও নিউ জেএমবিতে কাজ করছে৷''

পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক বলেন, ‘‘সাবেক (মূল) জেএমবি গুলশান ও শোলাকিয়ার হামলায় জড়িত ছিল না৷ জড়িত নিউ জেএমবি৷ মেজর জিয়া ও তামিম চৌধুরীর নেতৃত্বে জেএমবির একটি নতুন ভার্সন ‘নিউ জেএমবি' এই হামলা চালায়৷ তারাই এই হামলার ‘মাস্টার মাইন্ড'৷ এ হামলাগুলো ঐ দু'জনের নির্দেশনায় হয়েছিল৷''

পুলিশ জানায়, এই দু'জনকে আচক করা সম্ভব হলে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ব্যাপারে আরো তথ্য জানা যাবে৷ জানা যাবে তাদের অর্থ এবং আশ্রয় দাতাদের নাম৷ এছাড়া এদের ধরা গেলে জঙ্গিরা দুর্বল হয়ে পড়বে৷

এ নিয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদ (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জঙ্গিবাদের দু'টি দিক আছে৷ একটি হলো সশস্ত্র কার্যক্রম এবং আরেকটি হলো ‘মোটিভেশন' বা জঙ্গি বানানো৷ এই দু'জনকে গ্রেপ্তার করা গেলে জঙ্গি নেটওয়ার্ক সম্পর্কে হয়ত আরো তথ্য পাওয়া যাবে৷ শুধু তাই নয়, সেই তথ্য দিয়ে তাদের নেটওয়ার্কটিও ভেঙে দেয়া যাবে৷ তবে তাতে জঙ্গি বানানোর কাজতো বন্ধ হবে না৷''

তাঁর মতে, ‘‘জঙ্গিদের মোটিভেশন বা জঙ্গি বানানোর বন্ধ করতে হলে সামাজিকভাবে কাজ করতে হবে৷ সমাজে ধর্মের নামে যে বিদ্বেষ বা ঘৃণা ছড়ানোর তৎপরতা আছে, তা বন্ধ করতে হবে৷ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় জঙ্গিবাদের কোনো উপদান থাকলে তা দূর করতে হবে৷ শিক্ষকরা কেউ এই কাজে জড়িত থাকলে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে৷ আর পাঠক্রম থেকে শুরু করে শিক্ষা কাঠামোকে জঙ্গিদের প্রভাবমুক্ত করতে হবে৷''

তাঁর কথায়, ‘‘সবচেয়ে বড় কথা হলো আমাদের শিশুদের, কিশোর-কিশোরীদের, তরুণ, যুবাদের মনের কথা আমাদের জানতে হবে, বুঝতে হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য