গ্রিসের শরণার্থী নিয়ে জার্মানিতে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব
১৪ আগস্ট ২০২০জার্মানির ১৬টি রাজ্যের অধিকাংশই কেন্দ্রীয় সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে৷ আঙ্গেলা ম্যার্কেলের প্রশাসন বার্লিন ও থুরিঙ্গিয়া রাজ্যে গ্রিক শরণার্থী শিবির থেকে আশ্রয় প্রার্থীদের জার্মানিতে নিয়ে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে৷
গ্রিসেরবেশ কয়েকটি দ্বীপের শরণার্থী শিবিরে শত শত মানুষ গাদাগাদি করে অমানবিক জীবন যাপন করছে৷ জার্মানির ওই রাজ্য দু'টি এরই মধ্যে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে৷ আদালতে মানবিকতার বিষয়টি তুলে ধরে অবিলম্বে এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে৷ পাশাপাশি ওই শরণার্থীদের জার্মানিতে আনার প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয় সে আর্জিও জানানো হয়েছে৷
সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ রাজ্য নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়াও জানিয়েছে গ্রিসের শরণার্থী শিবির থেকে তারা আশ্রয়প্রার্থীদের নিতে প্রস্তুত৷
এমনকি এই রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী আর্মিন ল্যাসেট গত সপ্তাহে মোরিয়া দ্বীপে শরণার্থী শিবির ঘুরে এসেছেন৷ সেখানে শরণার্থীরা তাকে জার্মান চ্যান্সেলর ভেবে ঘিরে ধরেছিল৷ ফলে নিরাপত্তার স্বার্থে সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরেন তিনি৷ মোরিয়া দ্বীপে তিন হাজার শরণার্থী রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে সেখানে ১৭ হাজার শরণার্থী আছে৷ প্রায়ই স্থানীয়দের সাথে তাদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়৷
নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়াসহ বেশ কয়েকটি জার্মান রাজ্যের দাবি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সাথে শরণার্থী কর্মসূচির অংশ হিসেবে এটা করা উচিত৷ তবে বার্লিন ও থুরিঙ্গিয়া এমন কোনো শর্ত ছাড়াই শরণার্থীদের নিতে রাজি৷
সেহোফার জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত হলো যে-কোনো শরণার্থী সংকট ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমাধান মেনে হবে৷
জার্মান আইনজীবীরা বলছেন, যতক্ষণ এ বিষয়ের সঙ্গে জাতিসংঘ জড়িত না হবে, ততক্ষণ আসলে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়া যাবে না৷ কেবল জাতিসংঘই বলতে পারে এটা মানবিক সমস্যা৷ জাতিসংঘ জড়িত না হলে এটি কেবল রাজনৈতিক বিষয়, আইনি পদক্ষেপ এর বিরুদ্ধে নেয়া যাবে না৷
জার্মানিরএকটি বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা কার্পেনস্টাইন জানিয়েছে, জরুরি মানবিক সংকটে জার্মান আইন অনুযায়ী শরণার্থীদের ‘রেসিডেন্স পারমিট' দিতে পারে রাজ্য সরকার৷ এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন অবশ্য প্রয়োজন৷
এর আগে সেহোফার এ ধরনেরশরণার্থীদের জার্মানিতে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিলেন৷ যেমন: ইরাক থেকে ইয়াজিদিদের অথবা সিরিয়ার মানুষদের৷ তবে ওই শরণার্থীরা সরাসরি নিজেদের দেশ থেকে এসেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশ থেকে নয়৷ তাদের সাহায্য করেছে ইউএনএইচসিআর৷
ইটালি, গ্রিস আর মাল্টায় শরণার্থী বেশি হওয়ায় তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে শরণার্থী নেয়ার নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে৷
ক্রিস্টোফ হাসেলবাখ, বেন নাইট/এপিবি