1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রেলগাড়িতে থিয়েটার

৫ জুন ২০১২

গণ সচেতনতা তৈরিতে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য নিশ্চয়ই থিয়েটার৷ তাই হলোকস্টের বিষয়ে সঠিক ধারণা দিতে সেই মাধ্যমকেই ব্যবহার করছে একটি চেক থিয়েটার দল৷ কিন্তু সেটা হবে চলন্ত রেলগাড়িতে৷

https://p.dw.com/p/158A2
ছবি: AP

চলন্ত রেলগাড়িতে থিয়েটার৷ তাও আবার সেই ট্রেন চলবে সেই যাত্রাপথ ধরেই যেখান দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এবং বিশ্বযুদ্ধের সময়ে নাৎসিরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিদের নিয়ে যেত গরু ছাগলের মত রেলগাড়িতে গাদাগাদি করে আউশভিৎস সহ একাধিক মৃত্যুশিবিরে৷

চেক রিপাবলিকের এক ইহুদি, নাম তাঁর অ্যার্নস্ট লুস্টিগ৷ নাৎসিরা তাঁকেও ধরে নিয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু ভাগ্যবলে হলোকস্টের শিকার হন নি তিনি৷ অর্দ্ধমৃত অবস্থায় ফিরে আসেন মৃত্যু শিবির থেকে৷ তারপর নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি লেখেন একটি উপন্যাস, নাম ‘এ প্রেয়ার ফর কাটেরিনা হরোভিৎসোভা'৷ ২০১১ সালে মৃত্যু হয় এই লেখকের৷

তাঁর উপন্যাসেরই নাট্যরূপ দিয়েছেন প্রতিভাবান চেক নাট্যকার এবং থিয়েটার নির্দেশক পাভেল চালুপা৷ জন্মসূত্রে ইহুদি এই নাট্য ব্যক্তিত্ব ‘নাইন গেটস ফেস্টিভ্যাল' নামের একটি ইহুদি নাট্যোৎসবের ডিরেক্টরও৷ চালুপার মস্তিষ্কেই প্রথম এই রেলগাড়িতে চড়ে নাটকের দল নিয়ে নাৎসিদের অত্যাচার আর মানবিকতা লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরার অভিনব পরিকল্পনা আসে৷ চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগ শহরের পড পালমভকোউ থিয়েটার দলের অভিনেতা অভিনেত্রীরাই এ নাটকে অংশ নিচ্ছেন৷ আর নাট্যদল সহ এই ট্রেনটি পরিভ্রমণ করবে চেক রিপাবলিক, পোল্যান্ড আর জার্মানির সেইসব রেলপথে যেখান দিয়ে নাৎসি মৃত্যুশিবিরে নিয়ে যাওয়া হত হতভাগ্য ইহুদিদের৷ আর নাটকে বর্ণিত এই গল্পটি নেওয়া হয়েছে কাটেরিনা নামের এক ধনী ইহুদি নারীর জীবন থেকে৷ মৃত্যুশিবিরের পথে যাওয়ার সময় ট্রেনের মধ্যে কিছু নাৎসি অফিসার যে পরিবারকে অর্থের বিনিময়ে মুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিল৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের ঢুকিয়ে দেওয়া আউশভিৎস এর নারকীয় মৃত্যুশিবিরে৷

Zug der Erinnerung Hamburg
ছবি: picture-alliance/dpa

চেক রিপাবলিক থেকে যাত্রা শুরু করে পোল্যান্ডের ক্রাকাও সহ বিভিন্ন শহরে এই থিয়েটার ট্রেন থামবে৷ অভিনীত হবে নাৎসিদের নৃশংসতা আর অমানবিকতা নিয়ে এক মানবিক গল্প৷ কাটেরিনার ভূমিকায় মোট দুটি তরুণী অভিনয় করবেন পালা করে৷ তাঁরা দুজনেই উত্তেজিত এবং এমন একটি কাজের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পেরে আনন্দিত তো বটেই৷

বলা বাহুল্য, মানুষের ওপর নৃশসংতা আর বর্বরতা মানুষেই করে থাকে৷ কিন্তু ইতিহাসের সাক্ষী সেই অন্যায়কে বারেবারে ফিরিয়ে এনে প্রমাণ করে দেয় তারা কতটা ভুল ছিল৷ যতবার সেই দৃশ্যাবলী চোখের সামনে দেখা যাবে, ততবারই ভবিষ্যতের নৃশংস বর্বর মানুষেরা তার থেকে শিক্ষা নেবে৷ সভ্যতার এটাই বড় হাতিয়ার৷ আর কে না জানে, শিল্পের মত এতবড় জন সচেতনতার শক্তি বিশ্বের কোন আগ্নেয়াস্ত্রের নেই৷ কারণ, শিল্প তার স্থান করে নেয় মানুষের হৃদয়ের ভালোবাসার আঙিনায়৷ যেখানে সে অমর৷ আতঙ্ক বা হুমকি তো কখনো হৃদয়ে স্থান পেতে পারে না! তা সে ধর্মের নামেই হোক কিংবা রাজনীতির নামে৷

প্রতিবেদন: এএফপি / সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য