চা শ্রমিকেরা কাজে ফিরছে
২২ আগস্ট ২০২২রোববার রাতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের এক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়৷ তাতে বলা হয়, মজুরি বাড়ানোর দাবি নিয়ে শ্রমিকরা দুর্গাপূজার আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলবেন, যা আয়োজনের উদ্যোগ নেবে জেলা প্রশাসন৷ আর বাগান মালিকরা বাগানের প্রচলিত প্রথা অনুসারে ধর্মঘটকালীন মজুরি শ্রমিকদের পরিশোধ করবেন৷ এরপর সোমবার সকালেই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন৷
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন দেশের ২৪১টি চা বাগানের প্রায় সোয়া লাখ শ্রমিক৷ প্রথম চারদিন শ্রমিকরা প্রতিদিন দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন৷ ১৩ আগস্ট থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা৷
১১ দিন পর গত ২০ আগস্ট শ্রম অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠকে দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকায় রাজি হয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা৷ কিন্তু আন্দোলনকারী শ্রমিকদের একটি অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে রোববার রাজপথে নামে৷
এই প্রেক্ষাপটে রোববার রাতে আবার চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাহিদুল ইসলাম৷
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ‘সম্মান' জানিয়ে ১২০টাকা মজুরিতেই সোমবার থেকে কাজে যোগ দিচ্ছেন তারা৷ যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে বিজয় ছাড়াও রয়েছেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেণ পাল, সহসভাপতি পংকজ চন্দ্র, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালন্দি প্রমুখ৷
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘মামনীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তার সম্মানে চা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং-বি ৭৭ তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আগামীকাল ২২/০৮/২২ কাজে যোগ দেবেন৷ আপাতত চলমান মজুরি অর্থাৎ ১২০/-(একশত বিশ) টাকা হারেই শ্রমিকগণ কাজে যোগদান করবেন৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্স পরবর্তীতে মজুরির বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার পর চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে মর্মে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দাবি জানান৷
‘‘আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার পূর্বে মামনীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হওয়ার জন্য চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আবেদন করেছেন যা জেলা প্রশাসক কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থাপিত হবে৷ চা শ্রমিকদের অন্যান্য দাবিসমূহ লিখিত আকারে জেলা প্রশাসকের নিকট দাখিল করবেন৷ জেলা প্রশাসক প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার জন্য দাবিসমূহ প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করবেন৷’’
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)