চাকরি না খুঁজে উল্টো দিতেও পারেন
২৫ মে ২০১৬প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, না, যতটা সহজ শোনায় ব্যাপারটা ততটা সহজ নয়৷ তবে, খুব কঠিনও নয়৷ ইন্টারনেটের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই এখন সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে চলে এসেছে, হয়ে গেছে আগের চেয়ে সহজ৷ সেই সহজ দুনিয়া থেকে পয়সা আছে সহজ কিছু উপায় বাতলে দিচ্ছি৷
সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইউটিউব
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম অর্থ আয়ের এক বড় উপায়৷ বিশেষ করে ইউটিউব৷ রান্না শেখানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন সমস্যার সহজ সমাধান কিংবা ছোট নাটক তৈরি অথবা গেম খেলা – ইউটিউব থেকে পয়সা আয় খুব বেশি কঠিন নয়৷ এর কারণ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং সাইটটি, যারা কন্টেন্ট তৈরি করেন, তাদের সঙ্গে আয়ের একটা অংশ শেয়ার করে৷ ইতোমধ্যে বাংলাদেশের কয়েকজন তরুণ এই পথে গিয়ে ভালো করছেন৷ চাইলে আপনিও ইউটিউব-স্টার হবার চেষ্টা করতে পারেন৷ এ জন্য দরকার ক্রিয়েটিভ কিছু আইডিয়া, ভিডিও করার উপকরণ এবং অবশ্যই ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা৷
ফেসবুক বা টুইটার অবশ্য কন্টেন্ট যারা তৈরি করেন তাদের এখনো সরাসরি কোনো টাকা-পয়সা দেয় না৷ তবে এক্ষেত্রে অর্থ উপার্জনের উপায় একটু ভিন্ন হতে পারে৷ আপনি চাইলে কোনো ব্র্যান্ডের ফেসবুক বা টুইটার অ্যাকাউন্ট ‘ম্যানেজ' করতে পারেন৷ মূল কাজ হবে সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহার করে সেই পণ্যের প্রসার বাড়ানো৷ এ জন্য পণ্য ব্যবহারকারীর সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে ফেসবুক বা টুইটারে৷ এই কাজে প্রযুক্তি জ্ঞানের পাশাপাশি ভাষার দক্ষতাও থাকতে হবে৷ বিশেষ করে ভালো ইংরেজি জানা থাকলে কাজের পরিধি অনেক বাড়বে৷
কাজ করুন ঘরে বসে
আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ আয়ের দিক থেকেও খুব বেশি পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের ‘ইন্টারনেট প্রজন্ম'৷ এক্ষেত্রে সহায়তা করছে ফ্রিল্যান্সার বা মুক্তপেশাজীবীদের কাজ দেয় এমন কিছু ওয়েবসাইট৷ এ সব সাইটে গিয়ে নিবন্ধনের পর নিজের যোগ্যতাগুলো সেখানে দিয়ে দিতে হবে৷ এরপর আপনি যা জানেন, সেটা হতে পারে ওয়েব ডিজাইনিং, গ্রাফিক ডিজাইনিং কিংবা লেখালেখি – সেই কাজ পেলে করুন৷ প্রথমদিকে একটু সস্তায় করে দিতে পারেন৷ তবে কাজ ভালো করলে এ সব সাইটে রেটিংয়ে আপনার অবস্থা ভালো হবে৷ আর রেটিং যত ভালো, পরিবর্তীতে কাজ পাওয়া ততই সহজ৷ একসময় চাইলে নিজে ছোটখাট একটা কোম্পানি গড়ে অন্যদেরও কাজ, অর্থাৎ চাকরি দিতে পারবেন৷
গুগল থেকে অর্থ আয়
বিষয়ভিত্তিক ওয়েবসাইট থেকে অর্থ আয়ের ক্ষেত্রে এক বড় উৎস হচ্ছে গুগল অ্যাডসেন্স৷ আপনার ওয়েবসাইটটি যদি জনপ্রিয়তা অর্জনে সক্ষম হয় এবং গুগলের নিয়মকানুন মেনে পরিচালনা করা হয়, তাহলে গুগল অ্যাডসেন্সের বিজ্ঞাপন পেতে পারেন৷ তবে সমস্যা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত বাংলা ভাষা গুগলের এই সেবায় অন্তর্ভূক্ত হয়নি, যদিও কয়েকটি বাংলা ভাষার ওয়েবসাইটে গুগল অ্যাডসেন্সের বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হচ্ছে, সম্ভবত বিশেষ উপায়ে কিংবা পরীক্ষামূলকভাবে৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিষয়ভিত্তিক ব্লগাররা গুগল অ্যাডসেন্স থেকে ভালো অর্থ উপার্জন করেন, যা তাদের জন্য জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস৷
এখানে লেখা প্রয়োজন, ইন্টারনেটে অর্থ আয় সহজ হলেও এখনো বেশ কিছু বাধা রয়ে গেছে৷ বিশেষ করে বাংলাদেশে ‘পেপ্যাল' সেবা এখনো চালু হয়নি৷ ইন্টারনেটে উপার্জিত অর্থ সহজে দেশের অ্যাকাউন্টে জমা করা যাচ্ছে না বলে মাঝে মাঝে মুক্ত পেশাজীবীরা অভিযোগ করেন৷ আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, উচ্চগতির ইন্টারনেট এখনো সব জায়গায় সহজলভ্য হয়নি৷ এ সব অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিভিন্ন বিষয়ে মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে বাংলাদেশে বসে থেকে অর্থ আয় করে বেকারত্ব ঘুচাতে পারবেন আরো অনেকে৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷