সামুদ্রিক প্রাণীদের সংখ্যা কমছে
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ডাব্লিউডাব্লিউএফ-এর নতুন রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মাত্রাধিক মাছ ধরা, সেই সঙ্গে দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ১৯৭০ থেকে ২০১০, এই চল্লিশ বছরে সাগরে তথাকথিত কমার্সিয়াল ফিশ স্টক বা বাণিজ্যিক মাছের পরিমাণ বিপুলভাবে কমে গেছে৷ লিভিং ব্লু প্ল্যানেট রিপোর্টের বক্তব্য হলো, যে সব মাছ বিশ্বের খাদ্য সরবরাহের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলিই সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে৷
যেমন টুনা আর ম্যাকারেল মাছ কমেছে ৭৪ শতাংশ৷ একদিকে মাছেদের প্রজনন প্রক্রিয়ার চেয়ে দ্রুততর হারে মাছ ধরা হচ্ছে; অন্যদিকে তাদের ডিম পাড়ার জায়গাগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে – বলেছেন ডাব্লিউডাব্লিউএফ ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রধান মার্কো লাম্বেরতিনি৷ এছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র মানবগোষ্ঠীদেরই এর মূল্য চোকাতে হচ্ছে, কেননা তারাই তাদের জীবিকার জন্য সাগরের ওপরে নির্ভর৷
শুধু মাছই নয়, সেই সঙ্গে প্রবাল দ্বীপ, ম্যানগ্রোভ বা শ্বাসমূল অরণ্য এবং সামুদ্রিক ঘাস, সব কিছু উধাও হচ্ছে৷ মনে রাখা দরকার, মাছেদের এক তৃতীয়াংশ এই সব প্রবাল দ্বীপের উপর নির্ভর, যেমন পৃথিবীর প্রায় ৮৫ কোটি মানুষের জীবিকা সামুদ্রিক মাছেদের উপর নির্ভর৷ প্রবাল দ্বীপগুলোর অর্ধেক ইতিমধ্যে অন্তর্হিত হয়েছে, এবং বিশ্বের উষ্ণায়ন চলতে থাকলে, বাকি অর্ধেকও ২০৫০ সালের মধ্যে উধাও হবে৷ হাঙর ও স্টিং রে গোত্রীয় মাছেদের প্রতিটি চারটে প্রজাতির মধ্যে একটি আজ বিলুপ্ত হওয়ার মুখে৷
ডাব্লিউডাব্লিউএফ-এর পক্ষে বিশ্বের নেতৃ – তথা সরকারবর্গের প্রতি আবেদন জানানো ছাড়া আর বিশেষ কিছু করার নেই৷ তবে রিপোর্টে সুরক্ষিত সামুদ্রিক এলাকার পরিমাণ ২০২০ সালের মধ্যে বর্তমান তিন দশমিক চার শতাংশ থেকে তিনগুণ বাড়ানোর ডাক দেওয়া হয়েছে৷ ‘‘সমুদ্রে যে গতিতে পরিবর্তন ঘটছে, তা থেকে বোঝা যায় যে, আর নষ্ট করার মতো সময় নেই'', বলেছেন লাম্বেরতিনি৷ ‘‘আমাদের জীবদ্দশাতেই এই সব পরিবর্তন ঘটছে৷ আমাদের এখনই পথ বদলাতে হবে এবং আমরা তা করার ক্ষমতা রাখি৷''
এসি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)