নিয়ম এড়াতে আত্মহত্যা
৩০ মে ২০১৪
পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে চীনে হাজার হাজার বছর ধরে একটা ঐতিহ্য চলে এসেছে৷ মৃতদেহ কফিনে ভরে সমাধিতে রাখা হয়৷ এভাবে আত্মীয়স্বজনদের কাছেই থেকে যান পূর্বপুরুষরা৷
জনসংখ্যার চাপ ও উন্নয়নের তাগিদে চীনে জমি ক্রমশঃ দুর্লভ হয়ে উঠছে৷ ফলে যেখানে-সেখানে পূর্বপুরুষদের সমাধি বাধা হয়ে উঠছিল৷ চীনা কর্তৃপক্ষ গত কয়েক বছরে এমন অনেক সমাধি ভেঙে ফেলেছে৷ সরকার চায়, মৃতদেহ এভাবে সংরক্ষণ না করে দাহ করা হোক৷ তবে শুধু প্রচার অভিযানে কাজ হচ্ছে না৷ তাই পূবের আনহুই প্রদেশের আনচিং শহরের কর্তৃপক্ষ স্থির করেছে, ১লা জুনের পর বাধ্যতামূলকভাবে মৃতদেহ সৎকার করতে হবে৷ সমাধি গড়ে তাতে কফিনে করে রেখে দিলে চলবে না৷ মে মাসেই কফিন বাজেয়াপ্ত করার কাজ শুরু হয়ে গেছে৷
পরম্পরার উপর এমন আঘাত সইতে পারছে না অনেকেই৷ সেই অঞ্চলে ছয়জন বৃদ্ধের সাম্প্রতিক আত্মহত্যার ঘটনা গোটা বিষয়টিকে আরও উসকে দিয়েছে৷ মৃতদের পরিবারের দাবি, নতুন নিয়ম এড়াতে তাঁরা নাকি আগেই স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছেন৷ ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ সংবাদপত্র এ বিষয়ে তাদের প্রতিবেদনে অবশ্য মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছে৷
সংবাদপত্রটি ‘বেইজিং নিউজ’-কে উদ্ধৃত করে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ সেই রিপোর্ট
অনুযায়ী, গত ৫ই মে সরকারি ঘোষণা শোনার পরই ৯১ বছরের এক বৃদ্ধা আত্মহত্যা করেন৷ আরেক ৮৩ বছরের বৃদ্ধার সামনেই সরকারি কর্মকর্তারা তাঁর কফিন ভেঙে দু-টুকরো করে দেন৷ সেই ধাক্কা সামলাতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেন৷ উল্লেখ্য, অনেক মানুষ জীবদ্দশাতেই প্রায় এক দশক ধরে নিজের কফিন প্রস্তুত করেন৷ ৬৮ বছরের এক নারী কূয়ায় ঝাঁপ মেরে আত্মহত্যা করেন৷ বাকিরা বিষ খেয়ে মারা যান৷
স্থানীয় সরকারের দাবি, নতুন নিয়মের সঙ্গে এই সব মৃত্যুর ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই৷ তাঁরা সবাই নাকি স্বেচ্ছায় নিজেদের কফিন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন৷ চীনের মতো বড় দেশে বয়স্ক মানুষের রোগ ও মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত স্বাভাবিক৷
চীনের সব অঞ্চলে অবশ্য কফিন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে না৷ তবে কবর ভেঙে নির্মাণের ঘটনা বিরল নয়৷ শুধু হেনান প্রদেশেই ২০১২ সালে প্রায় ৪ লক্ষ কবর ভেঙে দেওয়া হয়৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ)