বাজার থেকে ভাইরাস
১২ মে ২০১৩উপমহাদেশের মতোই, চীনের অধিকাংশ এলাকায় হাঁস-মুরগি এখনও জ্যান্ত অবস্থাতেই বাজারে আনা হয়৷ সেগুলো রাখা থাকে ছোট ছোট খাঁচায়৷ পায়রাও বিক্রি হয় – খাবার জন্য৷ দোকানি সেখানেই পাখি মেরে, পালক ছাড়িয়ে, মাংস কেটে খদ্দেরের হাতে তুলে দেয়৷ এ ধরনের দোকান-বাজারে একবার পাখির জ্বরের ভাইরাস ঢুকলে, তা ছড়াতে বেশি দেরি হয় না৷ আবার তাকে নির্মূল করাও অনুরূপ শক্ত, কেননা সর্বক্ষণই নতুন হাঁস-মুরগি, পায়রা ইত্যাদি আসছে খাঁচায় করে৷
এইচসেভেনএননাইন ভাইরাসটিও সম্ভবত এই ধরনের একটি হাঁস-মুরগির বাজার থেকেই ছড়িয়েছে৷ অধিকাংশ সংক্রমণের ঘটনা যে শাংহাই অঞ্চলে ঘটেছে, সেটাও তার একটা প্রমাণ৷ ব্যাপারিরা পাখিদের ময়লা ভর্তি খাঁচায় কি বাক্সে করে হাঁস-মুরগি একটি বাজার থেকে আরেকটি বাজারে নিয়ে যায়৷ ভাইরাস ছড়ানোর এর চাইতে ভালো পন্থা আর কিছু হতে পারে না!
সেই পথ ও পন্থা রোধের জন্যই শাংহাই প্রশাসন এপ্রিলের শুরু থেকে জ্যান্ত হাঁস-মুরগি বিক্রি বন্ধ করে দেয়৷ সঙ্গে সঙ্গে রোগের সংক্রমণও কমে যায়৷ গত তিন সপ্তাহ ধরে শাংহাইতে আর কোনো মানুষ পাখির জ্বরে আক্রান্ত হয়নি৷ মুশকিল এই যে, শাংহাই-এর মতো একটি বড় শহরে যা সম্ভব, গোটা দেশের হাজার হাজার হাঁস-মুরগির বাজার তো সেভাবে এক কথায় বন্ধ করে দেওয়া চলে না৷
তবে একটা পন্থা আছে, বলছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা: হাঁস-মুরগির বাজারগুলো মাসে একদিন কিংবা দু'দিন বন্ধ রাখলেই ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি ও সংক্রমণের সূত্রটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে৷ তবে ঐ বন্ধের সময় বাজারে কোনোরকম জীবন্ত হাঁস-মুরগি রাখলে চলবে না৷ এছাড়া রাত্রে বাজারের হলগুলিতে জ্যান্ত হাঁস-মুরগি রাখা নিষিদ্ধ করা যেতে পারে – সেভাবেও সংক্রমণের চক্রটি ভঙ্গ করা যেতে পারে৷
গতবার পাখির জ্বরের প্রাদুর্ভাব চলাকালীন হংকং-এ এ সব ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে৷ তবে শেষমেষ – অন্তত শাংহাই-এর মতো বড় শহরে – ইউরোপের মতোই – হাঁস-মুরগি শুধুমাত্র ফ্রোজেন ফুড বা হিমায়িত খাদ্য হিসেবেই বিক্রি হতে পারে৷