নব্য মধ্যবিত্তদের যত সমস্যা
২৭ মে ২০১৩অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা ওইসিডি'র হিসেবে চীনের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ এখন মধ্যবিত্তের পর্যায়ে পড়ে৷ ২০২০ সালের মধ্যে সেটা বেড়ে ৪০ শতাংশ হতে পারে বলেও জানাচ্ছে সংস্থাটি৷
এই মধ্যবিত্ত সমাজের সদস্যদের মৌলিক চাহিদার অভাব না থাকলেও রয়েছে অন্য সমস্যা৷ যেমন শহরের বায়ু দূষণ, সন্তানের জন্য ভাল শিক্ষার ব্যবস্থা, ভেজালমুক্ত খাবার এসব৷
একটি পরিবারের উদাহরণ দিলে বিষয়টা হয়তো আরেকটু পরিষ্কার হবে৷ ৪২ বছরের লি না স্বামী ৪৮ বছরের চি শুব ও মেয়ে ১১ বছরের ন্যান্সিকে নিয়ে থাকেন বেইজিং এর উপকণ্ঠে, নিজেদের কেনা ফ্ল্যাটে৷
লি না বলছেন, তিনি ও তাঁর স্বামী জীবনের অর্ধেকটা সময় ব্যয় করেছেন নিজেদের একটি ফ্ল্যাটের স্বপ্ন পূরণে৷ আজ থেকে ২০ বছর আগে তিনি শ্যানডং প্রদেশ থেকে এসেছেন বেইজিং এ৷ সে সময় তিনি আরেকজনের সঙ্গে মিলে বাসা ভাড়া করতে থাকতেন৷ এখন তিনি একটি চিড়িয়াখানায় খাদ্য সরবরাহের কাজ করেন৷ আর তাঁর স্বামী সরকারি একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন৷
বর্তমানে তাদের আর্থিক অবস্থা এমন যে, নিজেদের ফ্ল্যাট ছাড়াও রয়েছে দুটি গাড়ি, রয়েছে রাঁধুনি৷ আর প্রতি বছর ছুটি কাটাতে যান জাপান, কোরিয়া বা অ্যামেরিকায়৷
কিন্তু তাই বলে যে নিশ্চিন্তে জীবন কাটাচ্ছেন তা নয়৷ এই যেমন বেইজিং এর বাতাসে দূষণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় তারা চিন্তিত৷ এছাড়া মেয়ের জন্য ভালো স্কুলের ব্যবস্থা করা নিয়েও ভাবনায় রয়েছেন তাঁরা৷ কেননা ভালো স্কুলগুলোতে আজকাল প্রতিযোগিতা অনেক বেড়ে গেছে৷ তাই সেখানে সুযোগ পাওয়াটা কঠিন৷ তবে বিকল্প হিসেবে কেউ যদি বড় অংকের আর্থিক অনুদান দিতে পারে তাহলে আবার প্রতিযোগিতা ছাড়াই ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়৷ তাই বাধ্য হয়ে অনেক বাবা-মাকে এই বাড়তি টাকাটা জোগাড়ের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে৷
এর বাইরে রয়েছে ভেজালমুক্ত খাবারের সমস্যা৷ এজন্য সবাই মিলে বাইরে একসঙ্গে খেতে যাওয়ার সাহস করছে না লি না পরিবার৷ কেননা পয়োনালিতে পড়ে থাকা তেল তুলে এনে সেটা নতুন বলে বিক্রি করা, ভেড়ার মাংসের আড়ালে ইঁদুরের মাংস বিক্রি – এমন সব ঘটনা ঘটে গেছে সম্প্রতি৷ যা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে লি না'কে৷
জেডএইচ / এসবি (এএফপি)