চুম্বন-আলিঙ্গন ইরান-চুক্তি বাঁচাবে?
২৫ এপ্রিল ২০১৮দুই নেতার মধ্যে প্রকাশ্যে ব্যক্তিগত উষ্ণতার একাধিক মুহূর্ত দেখা গেছে৷ করমর্দন, আলিঙ্গনের পাশাপাশি মৃদু চুম্বন, পিঠ চাপড়ানো, পরনের কোট ঝেড়ে দেবার মতো ঘটনা ক্যামেরাবন্দি হয়েছে৷ ইউরোপের অন্য কোনো নেতার সঙ্গে ট্রাম্প এত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেননি৷
ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সুর সম্ভবত কিছুটা নরম করতে পেরেছেন মাক্রোঁ৷বর্তমান চুক্তির দুর্বলতা স্বীকার করে নিয়ে তিনি নতুন এক আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন৷ তবে বর্তমান চুক্তি বাতিল না করে সেটিকে সম্প্রসারণ করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও গোটা অঞ্চলে সে দেশের প্রভাবে রাশ টানতে চান মাক্রোঁ৷ উল্লেখ্য, বর্তমান চুক্তি অটুট রেখে ট্রাম্পেরও মুখরক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইউরোপ৷
এই মর্মে মাক্রোঁ স্পষ্ট এক প্রস্তাব পেশ করেছেন৷ তার আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ বর্তমান চুক্তির মেয়াদ, অর্থাৎ ২০২৫ সাল পর্যন্ত ইরানের পরমাণু কর্মসূচির উপর কড়া নজর রাখবে৷ তার পরেও নজরদারি শিথিল করা হবে না৷ এর মধ্যে সে দেশের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে রাশ টানতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷ ইয়েমেন, সিরিয়া, ইরাক ও লেবাননে ইরানের প্রভাব কমাতে সেসব দেশের সংকটের রাজনৈতিক সমাধানসূত্রের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে৷ তবে এমন এক বিস্তারিত চুক্তির আওতায় ইরান কী বাড়তি সুবিধা পাবে, তা উল্লেখ করা হয়নি৷
ট্রাম্প এই প্রস্তাবকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ আগামী ১২ই মে তিনি এই চুক্তি থেকে সরে আসার যে হুমকি দিয়েছেন, সে বিষয়ে মতবদলের কোনো লক্ষণ এখনো তিনি দেখাচ্ছেন না৷ এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আবার তিনি ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির কড়া সমালোচনা করেন৷ তাঁর মতে, মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় সব প্রান্তেই সব সমস্যার পেছনে ইরানের হাত দেখতে পাওয়া যায়৷ সে দেশের সঙ্গে বৃহত্তর এক নতুন চুক্তির সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিলেও তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত সেই লক্ষ্য পূরণ না-ও হতে পারে৷
শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প মাক্রোঁর প্রস্তাবে রাজি হলেও ইরান চুক্তির আরও দুই সাক্ষরকারী দেশ রাশিয়া ও চীন এমন মনোভাব মেনে নেবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ ট্রাম্প বর্তমান চুক্তি বাতিল করলে ইরান তা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসার হুমকি দিয়েছে৷ মাক্রোঁ বলেছেন, ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত এই চুক্তি বাতিল করবেন কিনা, সেটা তিনিও জানেন না৷
শুক্রবার জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ইরান প্রসঙ্গেও আলোচনা করবেন৷ তিনিও ট্রাম্পকে বর্তমান চুক্তি মেনে চলার পরামর্শ দেবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ তবে মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে কট্টরপন্থি অংশ ইরানের প্রশ্নে জার্মানির ‘নরম' মনোভাবের কড়া সমালোচনা করছে৷ তাদের অভিযোগ, জার্মানি এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)