চার্লি চ্যাপলিন
১৪ নভেম্বর ২০১২হলিউডের নির্বাক চিত্রের যুগের কোনো চরিত্র যদি পপ আর্টের যুগ পর্যন্ত বেঁচে থেকে থাকে, তবে সেই চরিত্রটি হল চ্যাপলিনের ট্র্যাম্প৷ ‘‘সিটি লাইটস'' কিংবা ‘‘মডার্ন টাইমস''-এর মতো ছবি যে আজ ক্ল্যাসিক বলে গণ্য হয়, তারও একটা প্রধান কারণ হল ঐ বাউন্ডুলে, ভবঘুরে চরিত্রটি৷
দ্য ট্র্যাম্প কিন্তু আসলে একজন জেন্টলম্যান৷ সে রীতিমতো স্যুট-বুট পরে, হাতে দস্তানা রাখে, কিন্তু সবই শতচ্ছিন্ন৷ রাস্তা থেকে পোড়া সিগারেটের টুকরো কুড়িয়ে সিগারেট কেসে রাখে এই ট্র্যাম্প৷ তার আচার-ব্যবহার যে কোনো জেন্টলম্যানকে ছাড়িয়ে যায়: বিশেষ করে মহিলাদের প্রতি সে বিশেষভাবে শিভালরাস, অতিমাত্রায় শিষ্টাচরণ করে, দেখলেই মাথার টুপি তুলে অভিবাদন জানাতে ভোলে না৷
সেই সঙ্গে আছে ট্র্যাম্পের হাঁটার বিশেষ ভঙ্গিমা, অনেকটা হাঁসেদের চালে৷ এই অতি সাধারণ অসাধারণ মনুষ্যটি বিশের এবং ত্রিশের দশকে কিভাবে বিশ্বজয় করেছিল, তা আজ ভাবা শ্ক্ত৷ মহাত্মা গান্ধী কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ইউরোপ গেলে ঐ খুদে মানুষটির সঙ্গে দেখা করতে ভোলেননি৷
সেই ট্র্যাম্পের কতোগুলি ছড়ি কিংবা টুপি আজও অবশিষ্ট আছে, তা বলা শক্ত৷ কিন্তু লস এঞ্জেলেসে বনহ্যাম্সের নিলামে যে ছড়ি ও টুপিটি বিক্রি হচ্ছে, সেগুলি কারো ব্যক্তিগত মালিকানায় ছিল৷ আগামী ১৮ই নভেম্বরের নিলামে সেগুলোর দাম উঠবে চল্লিশ থেকে ষাট হাজার ডলার বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
অথচ চ্যাপলিন যে ভেবেচিন্তে এই খুদে বাউন্ডুলে চরিত্রটি সৃষ্টি করেছিলেন, এমন নয়৷ হলিউডের কিংবদন্তী বলে, কিস্টোন স্টুডিও'য় এক মেঘলা দিনে নাকি হঠাৎই দ্য ট্র্যম্প চরিত্রটি সৃষ্টি হয়, যদিও তাকে রুপালি পর্দায় প্রথম দেখা যায় ১৯১৪ সালে, ‘‘কিড অটো রেসেস অ্যাট ভেনিস'' ছবিতে৷
ট্র্যাম্পকে শেষবার দেখা যায় ১৯৩৬ সালে, ‘‘মডার্ন টাইমস'' ছবিতে৷ মাঝের ২২ বছরে চ্যাপলিনের এই ভবঘুরে চরিত্রটি বিংশ শতাব্দির পপ অর্থাৎ পপুলার কালচার বা গণসংস্কৃতির প্রথম আইকন বা প্রতীক সৃষ্টি করে৷ উনবিংশ শতাব্দির ইংরেজ ঔপন্যাসিক চার্ল্স ডিকেন্সের চরিত্র হতে পারত এই ট্র্যাম্প৷ আবার একবিংশ শতাব্দিতেও তার মহিমা একবিন্দু ক্ষুণ্ণ হয়নি৷
এসি/ডিজি (রয়টার্স)