বয়ফ্রেন্ড ট্র্যাকার
২৩ আগস্ট ২০১৩বিতর্ক মূলত ব্রাজিলে৷ কেননা সেখানেই দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ‘বয়ফ্রেন্ড ট্র্যাকার'৷ অবস্থা বেগতিক দেখে গুগল তার স্টোর থেকে অ্যাপটি সরিয়ে ফেলেছে৷ এজন্য প্রতিষ্ঠানটি কোনো কারণ ব্যাখ্যা না করলেও ধারণা করা হচ্ছে, এই অ্যাপ গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করছে৷
নির্মাতা মাথিয়ুস গ্রিজোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাত্র দু'মাস আগে প্রকাশ করা হয় অ্যাপটি৷ আর এরই মধ্যে পঞ্চাশ হাজারের মতো মানুষ সেটি ব্যবহার শুরু করেছে৷
মার্সিয়া আলমাইদার বয়স ৪৭ বছর৷ রিও ডি জানিরোর এই বাসিন্দা বলেন, ‘‘ব্রাজিলীয়রা কুচুটে স্বভাবের, কি আর বলবো? নিঃসন্দেহে অ্যাপটি জনপ্রিয়তা পাবে৷'' বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে সাত বছর আগে নিজের স্বামীকে ত্যাগ করেছেন আলমাইদার৷ তিনি এই অ্যাপের কার্যক্রমকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) নজরদারির সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘‘এটা ভিন্ন ধরনের গোয়েন্দাগিরি৷ আপনি আপনার ঘনিষ্ঠ একজনের উপর নজরদারি করছেন, অপরিচিত কারো উপর নয়৷''
প্রসঙ্গত, এনএসএ কর্মী এডোয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা গোপন নথিতে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি নজর রাখছে ব্রাজিলের উপর৷ এই তথ্য ফাঁস হওয়ার পর সেদেশ বেশ চটেছে যুক্তরাষ্ট্রের উপর৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে যুক্তরাষ্ট্রে একটি সরকারি প্রতিনিধি দলও পাঠিয়েছে ব্রাজিল৷
এনএসএ জটিলতার মধ্যেই ‘বয়ফ্রেন্ড ট্রাকার' নিয়ে আসেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সফটওয়্যার ডেভেলপার গ্রিজো৷ ফলে ব্রাজিলে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে বিতর্ক আরো বেড়েছে৷ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, গ্রিজোর এই উদ্ভাবন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিষয়ক আইন লঙ্ঘন করে থাকতে পারে৷ তাছাড়া ছেলেবন্ধুর উপর নজরদারির বিষয়টি হাস্যরসের হলেও বিপজ্জনক কাজেও অ্যাপটি ব্যবহার করা যেতে পারে৷ বিশেষ করে এটি একজন ব্যক্তির অবস্থান তাঁর নিজের অজান্তেই অন্যকে জানাতে পারে৷ যাঁর উপর নজর রাখা হচ্ছে তাঁর মোবাইলে আসা বা মোবাইল থেকে যাওয়া ক্ষুদেবার্তা অন্য কোনো ফোনে ফরওয়ার্ড করতে পারে৷ সর্বোপরি যে ফোনে অ্যাপটি সেটআপ করা হয়েছে, সেটি ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই নিরবে অন্য কোনো ফোনে কল করতে পারে৷ এতে করে নজরে থাকা ব্যক্তির কথোপকথনও অন্য কেউ শুনতে পারবে৷
ডেভেলপার গ্রিজো অবশ্য মনে করেন, তাঁর অ্যাপ কোনো ধরনের গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন করছে না৷ তাই গুগল তাদের স্টোর থেকে অ্যাপটি সরিয়ে ফেললেও গ্রিজোর ওয়েবসাইটে সেটি এখনো রয়েছে৷
এআই/ডিজি (এপি)