৬ সন্তানকে হত্যাও করেছেন মা!
১০ জুলাই ২০১৪যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনাটি একেবারে থ্রিলার ছবির মতো৷ মেগানের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার বেশ কিছুদিন পর ড্যারেন ওয়েস্ট নিজের ঘরেই খুঁজে পান সদ্যোজাত শিশুর লাশের অবশিষ্টাংশ৷ শুরু হয় পুলিশি তদন্ত৷ একে একে খুঁজে পাওয়া যায় ছয়টি সদ্যোজাত শিশুর লাশ৷ নতুন ছেলেবন্ধুর সঙ্গে জীবন শুরু করা মেগানের দিকেই ওঠে সন্দেহের আঙুল৷ পুলিশি জেরার মুখে ৩৯ বছর বয়সি মেগান স্বীকার করেন ছয়টি শিশুর হত্যাকারী তিনি৷ সেই থেকে তিনি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে কারাবন্দি৷ পুলিশের চোখে তখন তিনি সিরিয়াল ইনফ্যান্ট কিলার, অর্থাৎ ধারাবাহিক শিশু হত্যাকারী৷
কিন্তু শিশুগুলোর ডিএনএ পরীক্ষা থেকে বেরিয়ে এসেছে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ দেখা গেছে প্রতিটি শিশুরই মা মেগান হান্টসম্যান এবং বাবা ড্যারেন ওয়েস্ট৷ মেগান জানিয়েছেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে জন্মানো এই শিশুদের জন্মের পরপরই তিনি মেরে ফেলেন৷ ভূমিষ্ঠ হবার পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে কিংবা নাক-মুখ চেপে দম বন্ধ করে মেরে ফেলার পর পুরোনো তোয়ালে, জামা বা প্লাস্টিকের ব্যাগে জড়িয়ে ইউটা'র প্লিজেন্ট গ্রোভ-এর বাড়ির গ্যারেজ বা আশপাশের কোনো জায়গায় লুকিয়ে রাখেন তিনি৷
৮ বছর নিরাপদেই ছিলেন মেগান৷ কিন্তু সাবেক স্বামী ড্যারেন ওয়েস্ট প্লিজেন্ট গ্রোভ পুলিশকে এক শিশুর লাশ খুঁজে পাওয়ার খবর জানানোর পর একে একে বেরিয়ে আসে অনেক রোমহর্ষক তথ্য৷ মেগান জানান, ১৯৯৬ সালের আগে থেকেই তিনি মদ্যপানে ভীষণ আসক্ত৷ এ কারণে মানসিক বৈকল্যও দেখা দিয়েছিল তাঁর৷ সন্তান গর্ভে এলেই মনে হতো, সন্তান লালন-পালন করতে গেলে আর নেশা করা হবেনা৷ তাই গর্ভে সন্তান এলেও তা সবার কাছে সুকৌশলে গোপনে রাখতেন এবং সন্তান প্রসব করার পরই নিজ হাতে তাদের হত্যা করতেন৷
যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক সাড়া জাগানো এ ঘটনা বিশ্লেষণ করে একটি জট এখনো খুঁজে পাচ্ছেনা পুলিশ৷ ড্যারেন-মেগান দম্পতির তিনটি সন্তান এখনো বেঁচে আছে৷ তিনজনই মেয়ে৷ তাঁদের বয়স ১৪, ১৮ এবং ২০ বছর৷ অর্থাৎ একজনের জন্ম ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে, যখন সন্তান জন্ম দিয়েই হত্যা করে ফেলছিলেন মেগান৷ এখন ১৮ বছরে পা দেয়া মেয়েটিকে কেন হত্যা করেননি মেগান? কারণটা এখনো জানতে পারেনি পুলিশ৷
অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে মেগান হান্টসম্যানের মানসিক সুস্থতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে৷ আগামী ২১ শে জুলাই আদালতে হাজির হতে হবে তাঁকে৷ মামলার শুনানিতে অংশ নেয়ার মতো মানসিক সুস্থতা তাঁর আছে কিনা সেদিন তা যাচাই করবে আদালত৷
এসিবি/জেডএইচ (রয়টার্স)