জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের রক্ষায় বিশ্বকে নজর দিতে হবে
২ ডিসেম্বর ২০১৯স্পেনের মাদ্রিদে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে কপ-২৫ সম্মেলন৷ দুই সপ্তাহব্যাপী এই আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বের নেতৃবৃন্দকে জলবায়ু পরিবর্তনে ভয়াবহ হুমকির কথা স্মরণ করিয়ে দেন জাতিসংঘ মহাসচিব৷ তিনি বলেন, আমরা দ্রুত এমন একটা জায়গায় পৌছে যাচ্ছি যেখান থেকে আর ফেরার কোনো সুযোগ নেই৷ ‘‘প্রকৃতির বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ থামাতে হবে, এবং আমরা জানি সেটা সম্ভব,'' বলেন আন্তোনিও গুতেরেস৷ এজন্য খনি খনন বাদ দিয়ে সবাইকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং প্রাকৃতিক সমাধানের দিকে মনোযোগ দেয়ার আহবান জানান৷
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদি আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হই, তাহলে তারা ক্ষমা করবে না৷ প্রতি মুহূর্তে আমাদের নিষ্ক্রিয়তা পৃথিবীর প্রতিটি জীবিত মানুষকে ধ্বংস করে দিচ্ছে৷ এখনই সময় কাজ করার৷''
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে ‘জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ' (ইউএনএফসিসি) প্রক্রিয়ার ধীরগতি নিয়েও সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী৷ বাংলাদেশের মতো দুর্বল দেশগুলোতে জাতীয়ভাবে গ্রহণ করা অভিযোজনমূলক উদ্যোগে সহায়তা করার জন্য খুব কম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ বলেন, ‘‘বিভিন্ন উদ্দেশ্যে গঠন করা তহবিলগুলোতে পর্যাপ্ত মূলধনের অভাব রয়েছে৷ সরাসরি এবং সহজে তহবিল পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত এবং মানদণ্ড রয়েছে, বেশিরভাগই সেসব সক্ষম দেশগুলোর পক্ষেই যায়৷''
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা আমাদের মতো দেশগুলোর সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা থাকলেও ধারণার চেয়েও কম সহায়তা পাচ্ছি৷ এক্ষেত্রে একটি নতুন সিভিএফ এবং ভি-২০ ট্রাস্ট তহবিল গঠন এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ সম্ভব হলে সেটি হবে বড় সাফল্য৷''
বক্তৃতায় শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের কারণে সৃষ্ট পরিবেশগত বিপর্যয়ের কথা তুলে ধরেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমের প্রতিবেদনে৷ ‘‘মিয়ানমার থেকে আসা ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নানাভাবে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এরই মধ্যে পরিবেশ বিপর্যয়ের সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতাও আমাদের হয়েছে৷ সুতরাং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি, এর প্রভাব এবং মোকাবেলার সক্ষমতা অভাবের ওপর ভিত্তি করে দুর্বল দেশগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে,'' বলেন প্রধানমন্ত্রী৷
এই সম্মেলন চলবে দুই সপ্তাহব্যাপী৷ ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব দেশকে ‘ন্যাশনাল ক্লাইমেট অ্যাকশন প্ল্যান' তৈরির কাজ শেষ করতে হবে৷ যেসব দেশ এখনো এই কাজ শেষ করতে পারেনি, তাদের উপর চাপ তৈরির শেষ সুযোগ এবারের সম্মেলন৷
এফএস/ এসিবি (এপি, এএফপি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)