1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু শরণার্থী

দেবারতি গুহ১২ জানুয়ারি ২০১৩

জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছে ভয়াবহ এক ভবিষ্যতের দিকে, যেখানে বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে বিশাল জনগোষ্ঠির গৃহহারা হওয়া৷ পরিণামে সৃষ্টি হবে আরকটি বড় সমস্যা- ‘জলবায়ু শরণার্থী’-র সমস্যা৷

https://p.dw.com/p/17IHc
Cyclone Sidr affected Bangladeshi woman carries a pot of water to her tent at the devastated Komdamtola village in Bagerhat district, 25 November 2007. Bangladesh stepped up its military-led relief effort as aid poured into the cyclone-hit country and logistical difficulties eased, officials said. More than 3,400 people have been confirmed dead and the government estimates that 280,000 people have been left homeless by cyclone Sidr which smashed into the southern coast on November 15, prompting a massive aid operation. AFP PHOTO/Jewel SAMAD (Photo credit should read JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images)
ছবি: Jewel Samad/AFP/Getty Images

জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের অন্যান্য ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশের মানুষকেও ভাবিয়ে তুলেছে৷ বালি, বন, কোপেনহেগেন – কোনো সম্মেলনেই সঠিক অর্থে এর প্রতিকার উঠে আসেনি৷ অথচ প্রতিনিয়তই পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়ছে অত্যন্ত দ্রুত৷ এছাড়া, আর্কটিক অঞ্চলে বরফ গলে যাওয়া, সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধি, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদির ফলে মানুষ ‘জলবায়ু শরণার্থী' অথবা ‘পরিবেশ-উদ্বাস্তু বা অভিবাসী'-তে পরিণত হচ্ছে৷ বাধ্য হচ্ছে বাস্তুভিটা ত্যাগ করতে, দেশান্তরী হতে৷

BM/120113/Interview: The problem of 'Climate Refugee' in Bangladesh - MP3-Mono

ব্রিটেনের পত্রিকা ‘দ্য গার্ডিয়ান'-এর  এক নিবন্ধের তথ্য অনুযায়ী আগামী ৫০ বছরে বিশ্বের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে৷ এর পূর্বাভাষ দেখাও যাচ্ছে কোথাও কোথাও৷ ইতিমধ্যেই পাপুয়া নিউগিনির কার্টিরেট দ্বীপের অধিবাসীদের ‘জলবায়ু শরণার্থী' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ ২০১৫ সালের মধ্যে দ্বীপপুঞ্জটির সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷

বিশেষজ্ঞদের মতে, ২১০০ সাল নাগাদ যদি এক মিটার সমুদ্রসমতলের পরিবর্তন হয় তাতেই বাংলাদেশের তিন মিলিয়ন হেক্টর জমি প্লাবিত হতে পারে৷ সম্প্রতি সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফের সমুদ্র উপকূলের পানি পরিমাপ করে গবেষকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের উপকূলে প্রতিবছর ১৪ মিলিমিটার করে সমুদ্রের পানি বাড়ছে৷ তাছাড়া, ‘‘২০২০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে পানির উচ্চতা আরও বাড়বে এবং তার ফলে বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুতির পরিমাণ দ্রুততর ও তীব্রতর হবে'', জানান বাংলাদেশের জলবায়ু শরণার্থিদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্লাইমেট রেফিউজি' বা এসিআর-এর  প্রধান মুহাম্মদ আবু মুসা৷

তিনি জানান, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বে ৪৫ জনের মধ্যে ১ জন জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে৷ আর বাংলাদেশে সংখ্যাটা হবে প্রতি সাতজনে একজন৷ দেশের ১৭ ভাগ এলাকা বিলীন হয়ে যাবে সমুদ্র গর্ভে৷ এই তো এরই মধ্যে কুতুবদিয়া এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ মূল ভূখণ্ড ত্যাগ করে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন৷ বর্তমানে সারা বাংলাদেশে প্রায় ৮০ লক্ষ উদ্বাস্তু আছেন বলেও জানিয়েছেন আবু মুসা৷ তার ওপর প্রতিদিনই জলবায়ু পরিবর্তনের  কারণে নদীভাঙনের শিকার হয়ে ঢাকায় এসে বস্তি গড়ছে মানুষ৷ সচ্ছল কৃষকও হয়ে যাচ্ছেন বেকার৷

তাই পরিবেশ বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, আগামীতে বাংলাদেশের প্রায় তিন কোটি মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হবে৷ বাধ্য হবে অভিবাসী বা উদ্বাস্তুত হতে৷ কিন্তু এর প্রতিকার কী? মুহাম্মদ আবু মুসার কথায়, ‘‘অনেকেই মনে করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপদ থেকে বাংলাদেশের বাঁচার একমাত্র পথ অভিবাসন৷ আর সেক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ যেমন, ভারত বা মিয়ানমারকে এগিয়ে আসতে হবে, খুলে দিতে হবে কাঁটা তারের বেড়া৷ এর জন্য দেশগুলির সুশীল সমাজকে প্রথম পদক্ষেপটি নিতে হবে৷ কিন্তু সেটা বেশ জটিল একটা প্রক্রিয়া৷ তাই আমার মনে হয়, বাংলাদেশের মধ্যেই এর একটা সমাধান খুঁজে বের করতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে সরকারকে৷''

ARCHIV - Nach heftigen Monsun-Regenfällen bahnen sich am 29.08.2008 in der Nähe von Madhurganj in Indien Einwohner ihren Weg durch überflutete Straßen. Der fortschreitende Klimawandel bedroht direkt das Leben vieler Millionen Menschen auf dem Planeten. Die Berichte von Wissenschaftlern über die Auswirkungen wie Stürme, Dürren oder Überschwemmungen sind alarmierend und haben eine weitere Dimension: Klimaflüchtlinge. Bis zum Jahr 2050 könnten rund 200 Millionen Menschen wegen des Klimawandels ihre Existenzgrundlagen verlieren. Das berichteten UN- Organisationen und internationale Hilfsorganisationen am Mittwoch (10.06.2009) auf der UN-Klimakonferenz in Bonn. EPA/STR dpa (zu dpa-Korr: "Studie: Rund 200 Millionen Klima-Flüchtlinge" vom 10.06.2009) +++(c) dpa - Bildfunk+++
ছবি: picture-alliance/ dpa

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও পরিবেশের অন্যান্য ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ একান্তভাবে প্রয়োজন৷ প্রয়োজন পার্বত্য অঞ্চল, যেমন রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছাড়ি বা সিলেটের জমির পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার৷ প্রয়োজন জনসচেতনতা বৃদ্ধিরও৷ তবে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী শিল্পোন্নত দেশগুলি যদি তাদেরই সৃষ্ট ‘গ্রিনহাউস গ্যাস'-এর নিঃসরণ সময়মতো না কমায়, তাহলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে ব্যাপক জীবন ও সম্পদহানি এড়ানো অসম্ভব৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য