জলবায়ু সংকটের মারাত্মক চিত্র তুলে ধরছে জাতিসংঘ
৯ আগস্ট ২০২১বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বন্যা, খরা, অস্বাভাবিক উচ্চ তাপমাত্রা, দাবানলের মতো বিপর্যয় জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক কুপ্রভাব হাড়ে হাড়ে টের পাইয়ে দিচ্ছে৷ এই প্রবণতায় রাশ টানতে দ্রুত হস্তক্ষেপ করার জন্য চাপ ও তাগিদও বাড়ছে৷ নভেম্বর মাসে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে বিশ্বনেতারা সেই লক্ষ্যে সম্মিলিত লক্ষ্যমাত্রা স্থির করবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷
এমনই প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব সম্পর্কে মূল্যায়ন পেশ করতে চলেছে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট দফতর৷ জেনেভায় সোমবার থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট চারটি রিপোর্ট প্রকাশিত হবে৷ ৬৬টি দেশের ২৩৪ জন লেখক বিশ্বের সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সমন্বয়ে সেই সংকলন তৈরি করছেন৷ সাত বছর আগে শেষ বার সার্বিক পরিস্থিতির এমন বিস্তারিত মূল্যায়ন করা হয়েছিল৷ ১৯৯০ সাল থেকে এই নিয়ে মোট ছয়বার জাতিসংঘ এমন রিপোর্ট পেশ করছে৷ জীবাশ্মভিত্তিক তেল পোড়ানো, ব্যাপক কৃষিকাজ, অরণ্য বিনাশ, গবাদি পশুপালন এবং দূষণের মতো কার্যকলাপের ফলে মানুষ পরিবেশের যে ক্ষতি করে চলেছে, তার গতি ও পরিণতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে৷ মোটকথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন যে দায়ী, সে বিষয়ে প্রায় অকাট্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাব নেই৷ শুধু ২০১৩/১৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সবচেয়ে উষ্ণ ছয়টি বছর নথিভুক্ত করা হয়েছে৷
২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির আওতায় গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমিয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল৷ সেই প্রবণতা বড়জোর দুই ডিগ্রি, সম্ভব হলে দেড় ডিগ্রির বেশি যাতে না বাড়তে পারে, তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছিলেন বিশ্বনেতারা৷ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে আন্তরিকতার অভাব দেখা গেছে৷ কিন্তু সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে গ্লাসগো সম্মেলনে আরো জোরালো পদক্ষেপ নেবার জন্য চাপ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে৷
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আলাপ-আলোচনার পর জাতিসংঘের পরিবেশ জলবায়ু বিজ্ঞান প্যানেলের ১৯৫টি সদস্য দেশ শুক্রবার এই রিপোর্ট অনুমোদন করেছে৷ ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও মেরু প্রদেশে বরফ গলে চলায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা সম্পর্কে পূর্বাভাস পাওয়া যাবে৷ আরও সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির কল্যাণে এ বিষয়ে বিস্তারিত ও নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে৷ বলা বাহুল্য, সেই পূর্বাভাস যে স্বস্তির কোনো কারণ তুলে ধরবে, এমন আশা কেউ করছে না৷ বরং ঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতির আরও অবনতির চিত্র তুলে ধরতে চলেছে জাতিসংঘের প্রথম রিপোর্ট৷ এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত কর্তাব্যক্তিরা এমনই পূর্বাভাস দিচ্ছেন৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)