জাপানে রোবটের দেবী
১৪ আগস্ট ২০১৯জাপানের কিয়োটোতে এই কোদাইজি মন্দির৷ এটি চারশ' বছর পুরোনো এবং বৌদ্ধ দেবী ক্যাননের৷ অ্যান্ড্রয়েড রোবটের দেবীতে ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স' (এআই) দেয়া হয়েছে৷ ভক্তদের ধারণা, এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সহযোগিতায় দেবী অসীম জ্ঞানের অধিকারী হবেন৷
‘‘রোবটের মৃত্যু নেই৷ এ শুধু নিজেকে আপডেট করবে এবং বিকশিত হবে,'' বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন মন্দিরের পুরোহিত তেনশো গোতো৷ ‘‘রোবটের সৌন্দর্য্য তো এখানেই৷ এর জ্ঞান আহরণের সুযোগ চিরস্থায়ী ও অফুরন্ত৷''
‘‘এআই দিয়ে সে তার জ্ঞানের বিস্তার করবে এবং মানবজাতিকে কঠিন সমস্যার সমাধান দেবে৷ বৌদ্ধধর্মকে এ বদলে দেবে,'' গোটো যোগ করেন৷
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সাইজের এই সাইবর্গটি ঘাড়, মাথা ও হাত নাড়াতে পারে৷ এর মাথা, মুখ ও কাঁধ সিলিকনের আবরণ দিয়ে ঢাকা৷ শরীরের বাকি ধাতব ও যান্ত্রিক অংশগুলো স্পষ্ট দেখা যায়৷ প্রার্থনার মতো করে সে হাতের ভঙ্গি করতে পারে৷ চোখের পাতা নাড়াতে পারে এবং সুন্দর কণ্ঠে কথা বলতে পারে৷
এটি বানাতে দশ লাখ ডলার বা প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা খরচ হয়েছে৷ জেন মন্দির ও ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিরোশি ইমিগুরোর যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এই রোবট৷
তরুণ প্রজন্মকে মন্দিরের দিকে আকর্ষণ করার জন্য এই উদ্যোগ কাজে দেবে বলে মনে করেন পুরোহিত গোতো৷
‘‘তরুণরা মন্দিরকে শেষকৃত্য বা বিয়ের স্থান হিসেবে চেনেন৷ তাদের কাছে আমি সেকেলে৷ কিন্তু এই রোবট সেই দূরত্ব ঘোচাবে,'' বলেন তিনি৷
এই উদ্যোগকে অনেকে সাধুবাদ জানালেও অনেকে সমালোচনা করেছেন৷ বলেছেন, একটা ‘ফ্রাঙ্কেস্টাইন' দৈত্য তৈরি করা হচ্ছে৷ এক জরিপে কেউ কেউ একে অনেক বেশি মেকি বলে মন্তব্য করেছেন৷ অনেকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেননি রোবটের কাছে ধর্মোপদেশ শুনতে গিয়ে৷ ধর্মের পবিত্রতা রক্ষা করতে পারেনি বলে কোনো কোনো বিদেশি কোদাজি মন্দিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন৷
কিন্তু উদ্যোক্তারা মনে করেন, একদিন মানুষ বুঝবে এবং তাদের এই উদ্যোগকে আরো সাধুবাদ জানাবে৷
জেডএ/এসিবি (এএফপি)