রোবটের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কী দাঁড়াবে?
৯ জুলাই ২০১৯বর্তমান প্রবণতার ভিত্তিতে ধরে নেওয়া যায়, যে নানা ধরনের রোবটের বাজার আগামী ১০ বছরে সম্ভবত তিন গুণ বেড়ে যাবে৷ এর অর্থ, ভবিষ্যতে প্রায়ই আমাদের সঙ্গে রোবটের দেখাসাক্ষাৎ হবে৷ এমন ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমাদের মনে ভয়ভীতি হবে, নাকি আমরা সহজেই তা মেনে নেবো? দেশ অনুযায়ী সম্ভবত এই মনোভাব নির্ভর করে৷
মানুষ কতটা খুশিমনে অথবা বিরক্তির সঙ্গে রোবটের সঙ্গে ভাবের আদানপ্রদান করে, তাৎসিয়া নোমুরা সেই বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন৷ একটি গবেষণার আওতায় তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা ৭টি দেশের মানুষের কাছে কিছু প্রশ্ন রেখেছিলেন৷ ব্রিটেন, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, মেক্সিকো, চীন, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই গবেষণা চালানো হয়৷
তাতে জানা গেল, যে অ্যামেরিকার মানুষ রোবটদের বিষয়ে সবচেয়ে অনুকূল প্রতিক্রিয়া দেখান৷ তার পরেই জাপান, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, চীন ও ব্রিটেনের স্থান৷ কিন্তু মেক্সিকোর মানুষ এ বিষয়ে অত্যন্ত নেতিবাতক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন৷ প্রো. নোমুরা বলেন, ‘‘মানুষ রোবটকে ভালো না মন্দ মনে করেন, সেটি শুধু দেশের উপর নির্ভর করছে না৷ এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যেও ফারাক দেখা যায়৷ জাপানে সব প্রজন্মই রোবট পছন্দ করে৷ আবার ব্রিটেনে শুধু তরুণ প্রজন্মের প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক৷ বয়স্করা এটি পছন্দ করেন না৷ সম্ভবত নারী ও পুরুষের মধ্যেও ফারাক থাকতে পারে৷''
কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা পুরুষদের তুলনায় রোবট সম্পর্কে অনেক বেশি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন৷
জাপানের মানুষ মূলত হিউম্যানয়েড রোবট বেশি পছন্দ করেন৷ এমনকি তাদের মধ্যে মানুষের বৈশিষ্ট্যও রয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন৷ প্রো. নোমুরা এই মনোভাবের ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘জাপানে অ্যানিমিজম বা সর্বপ্রাণবাদ নামের একটি ধারণা চালু রয়েছে৷ কোনো বস্তুর মানুষের আকার থাকলেই তার মধ্যে আত্মাও রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়৷ সুধু জাপান নয়, সব সংস্কৃতিতেই অ্যানিমিজমের রকমফের রয়েছে৷''
সংবাদমাধ্যম ও পপ সংস্কৃতি রোবটের ভাবমূর্তি গড়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ভূমিকা রাখে৷ জাপানের চলচ্চিত্র ও মাংগা কমিকসে রোবটদের মধ্যে মানুষের অনেক বৈশিষ্ট্য দেখা যায়৷ যেমন অ্যাস্ট্রো বয় নামের ক্লাসিক চরিত্র৷ অথবা ‘গোস্ট ইন দ্য শেল' কাহিনির মাংগা সংস্করণে৷
হলিউডে ‘আইরোবট'-এর মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্রেরোবটরাই আধিপত্যবিস্তার করে মানবজাতির বিনাশের চেষ্টা করে৷
মিরা ফ্রিকে/এসবি