প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ
২৬ মে ২০১৭বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভাস্কর্যটি সরানোর কাজ শুরুর পর সুপ্রিম কোর্ট ফটকের সামনে বিক্ষোভ থেকে শুক্রবার সকালে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বাম ছাত্র সংগঠনগুলো৷ দুপুরে বের করা বিক্ষোভ মিছিলে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রঙিন পানি ছোড়ে পুলিশ৷ ঘটনাস্থল থেকে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে৷ আন্দোলনকারীরা বলছেন, পুলিশি হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন৷
রাস্তায় আন্দোলনের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে নিন্দা ও ক্ষোভ৷
আহনাফ হাসান রবিন লিখেছেন, ‘‘অপসারণ করা হলো ভাস্কর্য৷ অপসারিত হলো চেতনা৷ সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদ জানান, সোচ্চার হোন৷’’
অ্যাডভোকেট বিপুল লিখেছেন, ‘‘সরকার জামাতি হেফাজতির প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করল৷ এ দেশের মেরুদণ্ডহীন যুব এবং ছাত্রসমাজ চেয়ে চেয়ে দেখলেন মাত্র৷ যারা প্রতিবাদ করতে গেল, তাদের দিকে তেড়ে এলো পুলিশের টিয়ারশেলসহ জলকামান৷ আগেও বলেছিলাম, উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তি জামাত-হেফাজতি বিষধর সাপ ঘিরে ফেলেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকারকে৷’’
কাজল দাস ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আমি শুরু থেকেই একটি বিষয় বলে আসছি যে, ভাস্কর্য অপসারণ করা হলে নারীকেও অমর্যাদা করা হবে৷ একজন নারী ন্যায় বিচারের প্রতীক, এটি পুরুষতান্ত্রিক সমাজ মানবে না কোনোদিন, কারণ, এই পুরুষেরা যে ধর্ম তৈরি করেছে সেটা পুরুষতান্ত্রিক ধর্ম, এটাকে তারা নিজের মতো করে তৈরি করেছে, ব্যাখ্যা করেছে, টিকিয়ে রেখেছে৷ বাংলাদেশের নারী শক্তির পক্ষ থেকে ভাস্কর্য অপসারণের একটি শক্তিশালী প্রতিবাদ হওয়া উচিত৷’’
খান আসাদুজ্জামান মাসুম লিখেছেন, ‘‘ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশি হামলা৷ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক লিটন নন্দী সহ ৪ জন গ্রেপ্তার আহত ১০ জন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে৷ কাল সারা দেশে বিক্ষোভ লড়াইয়ে শামিল হোন৷’’
সাংবাদিক উদিসা ইমন লিখেছেন, ‘‘মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়নজলে ভাসি৷’’
আরেফিন মাহমুদুল হাসান লিখেছেন, ‘‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ করলো শেষ৷’’
দীপক সুমন লিখেছেন, ‘‘সুপ্রিমকোর্ট অভিমুখে ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে ছাত্র জনতার প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের জলকামান ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ কর্মসূচী যথারীতি চলছে৷ লিটন নন্দীসহ বাকিদের অবিলম্বে মুক্তি চাই৷’’ তিনি সবাইকে পথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন৷
প্রভাষ আমিন লিখেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের সামনে অপসারিত নারী ভাস্কর্যের জায়গায় তেঁতুলের এই ভাস্কর্যটি পুনঃস্থাপন করা হোক৷ হেফাজত খুশি হবে৷ হেফাজতের কাছে নারী মানেই তেঁতুল, তেঁতুল মানেই নারী৷’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘হেফাজত ইসলামের হেফাজত করতে চায়৷ অথচ বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম দেশে চমৎকার সব ভাস্কর্য রয়েছে৷ একটু গভীরভাবে ভাবলেই সরকারি দল বুঝতে পারবে, ভোটের অঙ্ক এভাবে মিলবে না৷ সরকার গত আট বছরে অনেক উন্নয়ন করেছে৷ উন্নয়ন দেখিয়ে ভোট চাওয়া যত সহজ, হেফাজতকে পোষ মানিয়ে তাদের ভোট নিজের দিকে টানা ততটাই কঠিন, আসলে অসম্ভব৷ হেফাজত হলো কাল সাপ৷ এদের দুধ কলা দিয়ে পুষলেও তারা ছোবল মারবেই৷’’
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী
প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...