যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ
১৭ জুন ২০১২কাসেম আলী দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান৷ আর আগে দুপুরে মানবতা বিরোধী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল-১ তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয়৷
বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মীর কাসেম আলীকে গ্রেফতারে কমলাপুরে দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ৷ দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলী তখন সেখানেই ছিলেন৷ সেখান থেকে তাকে আটক করে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেওয়া হয়৷ পুলিশের মিডিয়া উইং-এর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, সেখান থেকে তাকে বিকেলেই ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে৷
এর আগে সকালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মীর কাসেম আলীকে গ্রফতারের আদেশ দেয়ার আবেদন জানালে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল-১ তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে হাজিরের নির্দেশ দেন৷ অভিযোগ তিনি বাংলাদশের মুক্তিযুদ্ধের সময় আলবদর কমান্ডার এবং পাকিস্তানী সেনাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন৷তার প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় চট্টগ্রামে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটসহ মানবতা বিরোধী অপরাধ ঘটানো হয়৷ যা সাংবাদিকদের জানান প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রাণা দাসগুপ্ত৷
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে মীর কাসেমের বাড়ি হলেও একাত্তরে তিনি চট্টগ্রামে ছিলেন, চট্টগ্রামে তিনি মিন্টু নামে পরিচিত ছিলেন৷ ছাত্রাবস্থায়ই তিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত৷ তিনি জাময়াতের তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন৷
প্রসিকিউশন অভিযোগ করেছে মীর কাসেমের নির্দেশেই চট্টগ্রামে রাজাকার ক্যাম্পে বহু লোককে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়৷ এছাড়া বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের তালিকা তৈরিতেও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন৷ রানা দাসগুপ্ত জানান সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ও তার লোকজন স্বাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছিলেন৷
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর মীর কাসেম আলী সৌদি আরবে চলে যান৷ ফিরে আসেন ৭৫-এর ১৫ই আগষ্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর৷ দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশন ছাড়াও তিনি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক, ইবনে সিনা ট্রাস্টের সদস্য এবং বেসরকারি সংস্থা রাবেতা আলম আল ইসলামীর পরিচালকের পদে রয়েছেন৷ আর জামায়তে ইসলামীর কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য তিনি৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম