তুর্কি শিক্ষাবিদদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
৩০ অক্টোবর ২০১৭অন্তত ১০০ তুর্কি শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবীর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ গঠন করছে সেদেশের আইনজীবীরা৷ রোববার জার্মান গণমাধ্যম এনডিআর, ভিডিআর ও সুডডয়েচার সাইটুং-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্ত্রাসী সংগঠনের পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে অনেক বুদ্ধিজীবী এরই মধ্যে লিগ্যাল নোটিশও পেয়েছেন৷
২০১৬ সালের শুরুর দিকে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পি কে কে) যোদ্ধাদের দমন করতে চালানো সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এক পিটিশনে স্বাক্ষর করেন৷ ১,১২৮ জন তুর্কি ও আন্তর্জাতিক বুদ্ধিজীবী৷ তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাংশে দু'বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ওই অভিযানে কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক, পিকেকে যোদ্ধা ও তুর্কি নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়, ধ্বংস হয় কয়েকটি শহর, বাস্তুচ্যূত হন হাজার হাজার মানুষ৷ ‘অ্যাকাডেমিকস ফর পিস' হিসেবে পরিচিত এ দলের সদস্যরা পিটিশনে পরিকল্পিত এ হত্যাযজ্ঞ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, তুরস্কের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর লাগাতার হামলায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ সরকারের প্রতি পিকেকে'র সাথে আলোচনা শুরুর আহ্বানও জানান তাঁরা৷
অন্যদিকে, তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রেচেপ তাইয়েপ এর্দোয়ান এ পিটিশনে স্বাক্ষরকারীদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, তাঁদের শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন৷ এরই মধ্যে পিটিশনে স্বাক্ষর করায় তুরস্কে বিচারাধীন রয়েছেন অনেক শিক্ষাবিদ৷ অন্তত কয়েকশ' শিক্ষাবিদ চাকরি হারিয়েছেন৷ জার্মানিতে পালিয়ে এসেছেন প্রায় ১০০ জন বুদ্ধিজীবী৷ সরাসরি সহিংসতায় না জড়ালেও পিকেকে'র সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পিটিশনে স্বাক্ষরকারীদের বিরুদ্ধে৷
এর্দোয়ান সরকার মনে করে, তুরস্ককে ‘বেআইনি, সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করা' এসব শিক্ষাবিদের উদ্দেশ্য ছিল৷ সন্ত্রাসে মদত দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তুরস্কে সাড়ে সাত বছরের কারাবাসের বিধান রয়েছে৷
যদিও জার্মানিতে বসবাস করায় এসব শিক্ষাবিদদের আপাতত কারাবাসের সম্ভাবনা নেই, তবে দেশে ফিরলেই শাস্তি ভোগ করতে হবে তাঁদের৷ তবে তুরস্কের এ পদক্ষেপে জার্মান-তুরস্ক সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বাড়তে পারে৷ এ বছরের প্রথম ৯ মাসে পাঁচ হাজারেরও বেশি তুর্কি জার্মানিতে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন, যার মধ্যে অনেকেই শিক্ষাবিদ, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও সেনা কর্মকর্তা৷
চেজ উইন্টার/আরএন