1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে ইবোলা প্রতিরোধের ব্যবস্থা

মার্টিন রিবে/এসবি১০ নভেম্বর ২০১৪

ইবোলা৷ আজকের এই বিশ্বায়নের যুগে এই রোগ শুধু আফ্রিকায় সীমাবদ্ধ নেই৷ বিচ্ছিন্নভাবে হলেও তা বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও মাথাচাড়া দিচ্ছে৷ ইবোলার মোকাবিলায় জার্মানি ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ উদ্দেশ্য, এই রোগকে মূলেই বিনাশ করা৷

https://p.dw.com/p/1Djr9
Symbolbild Ebola Schutzanzüge Ärzte
ছবি: Joern Pollex/Getty Images

অনেক মানুষ মারা গেছেন৷ আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলে ইবোলা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান, আগামী কয়েক মাসে আরও হাজার দশেক মানুষের মৃত্যু ঘটবে৷

নাইজেরিয়া আক্রান্ত হবার ফলে জার্মানিতেও ঝুঁকি বাড়েছে৷ কারণ সে দেশের সঙ্গে সরাসরি বিমান যোগাযোগ রয়েছে৷ প্রতিদিন লুফৎহানসা বিমান সংস্থার ফ্লাইট নাইজেরিয়া যায়৷ ফলে ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরে এবোলায় আক্রান্ত রোগীদের আগমনের ঝুঁকি রয়েছে৷

ফ্রাংকফুর্ট শহরের স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান তাই নিজে নিয়মিত এয়ারপোর্টে গিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন৷ কোনো বিমানযাত্রীর শরীরে ইবোলার লক্ষণ দেখা দিলে তার জন্য বিশেষ এমার্জেন্সি প্ল্যান প্রস্তুত রয়েছে৷ ফ্রাংকফুর্ট শহরের স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান অধ্যাপক রেনে গটশালক বলেন, ‘‘পাইলট বিমানবন্দরকে এমন সন্দেহের কথা জানান৷ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তখন আমাদের খবর দেয়৷ বিমান অবতরণের আগেই সব রকম প্রস্তুতি হয়ে যায়৷ সন্দেহের সঠিক কারণ থাকলে রোগীর দায়িত্ব নেয়া হয়৷''

বিমানটিকে অনেক দূরে পার্ক করতে হয়৷ বিমানবন্দর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা বিমানে উঠে ছোঁয়াচে রোগীর শরীরে এক লাল পয়েন্ট বসিয়ে দেন৷ অধ্যাপক গটশালক বলেন, ‘‘রোগীর আশাপাশের যাত্রীদের হলুদ রং দেওয়া হয়৷ তাদের সংখ্যা বেশি নয়৷ বিমানের বাইরে এক হলুদ রংয়ের বাস তাঁদের তুলে নেয়৷ তাঁদের একটি বিশেষ জায়গায় নিয়ে গিয়ে ভালো করে পরীক্ষা করা হয়৷''

সন্দেহের কারণ ঘটলে তাঁদের ‘কোয়ারেনটাইন' করে রাখা হয়৷ বাকি সব বিমানযাত্রীরা সবুজ রং পান এবং তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়৷ এর মধ্যে বিশেষ যন্ত্রপাতি বসানো অ্যামবুলেন্সে করে রোগীকে নিয়ে যাবার প্রস্তুতি চলতে থাকে৷ কাজ শেষ হলে এই সব দামি যন্ত্রপাতি ফর্মালিন দিয়ে ডিস-ইনফেক্ট করে সেগুলি ধ্বংস করে ফেলতে হয়৷ এক বিশেষ ফিল্টার প্লান্ট গাড়ির নীচে ধারাবাহিক চাপ সৃষ্টি করে৷ ফলে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস বাইরের বাতাসের সঙ্গে মিশে যেতে পারে না৷ বিমান নামার আগেই এই বিশেষ যান প্রস্তুত থাকে৷ অধ্যাপক গটশালক বলেন, ‘‘রোগীকে বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ আলাদা আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগীকে রাখা হয়৷''

ডাক্তার বা চিকিৎসা কর্মী ওয়ার্ডের বাইরে নির্দিষ্ট জায়গায় প্রায় মহাকাশচারীর মতো বিশেষ পোশাক পরে নেন৷ এতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে৷ এই পোশাক পুরোপুরি এয়ার ও ওয়াটার টাইট এবং সংক্রমণও ঢুকতে দেয় না৷ ফ্রাংকফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পেটার ফ্লেকেনস্টাইন বলেন, ‘‘স্যুটের মধ্যে বাতাস ঢোকানো হয়, ফলে সেখানে চাপ সৃষ্টি হয়৷ কোনো জীবাণু যাতে ঢুকতে না পারে, এই এক্সেস প্রেসার তা নিশ্চিত করে৷''

হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে শুধু মারাত্মক ছোঁয়াচে ও মারণাত্মক রোগের চিকিৎসা করা হয়৷ এখনো পর্যন্ত দু'বার এটি ব্যবহার করা হয়েছে – সার্স ও লাসা ফিভার-এর ক্ষেত্রে৷ এমন রোগের আবির্ভাব না ঘটলেও ডাক্তার ও চিকিৎসা কর্মীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷ কারণ এমন ভারি স্যুট পরে কাজ করা কঠিন, তাই অনুশীলনের প্রয়োজন পড়ে৷ তার উপর হাতে দস্তানা পরা থাকলে আঙুলে কোনো অনুভূতিই বোঝা যায় না৷ সেটা মোটেই সহজ নয়৷ প্রত্যেকটি কাজে ২ থেকে ৩ গুণ বেশি সময় লাগে৷ প্লাস্টার তৈরি করা বা কিছু খোলা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে৷ স্বাভাবিক দস্তানা পরলে এমনটা হয় না৷

ফ্রাংকুর্টের স্বাস্থ্য দপ্তরে এক এমার্জেন্সি কমিটি প্রতি দু'দিন অন্তর ইবোলা পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেন৷ বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত যে, আপদকালীন পরিস্থিতির জন্য তাঁরা পুরোপুরি প্রস্তুত৷ অধ্যাপক গটশালক বলেন, ‘‘জার্মানিতে ইবোলার প্রসারের সম্ভাবনা সত্যি অত্যন্ত ক্ষীণ৷ সন্দেহ দেখা দিলেই অবিলম্বে নির্দিষ্ট জায়গায় চিকিৎসা করতে হবে৷ রোগীর সংস্পর্শে যারা এসেছে, তাদেরও পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে, দেখতে হবে তাদের শরীরেও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কিনা৷ এমনটা করলেই রোগের প্রসারের পথ দ্রুত ও নিরাপদে বন্ধ করা যাবে৷''

এই মারণাত্মক ভাইরাসের কোনো অনুমোদিত চিকিৎসা এখনো নেই৷ প্রতিরোধক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আপদকালীন পরিকল্পনাই একমাত্র পদক্ষেপ, যা কাজে লাগতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান