এর্দোয়ানের সম্ভাব্য জার্মানি সফর নিয়ে প্রতিক্রিয়া
৩১ জুলাই ২০১৮যদিও এর্দোয়ানের জার্মানিতে রাষ্ট্রীয় সফর নিয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি, তবুও তিনি সেই সফরে কী ধরনের রাষ্ট্রীয় অভ্যর্থনা পাবেন, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়ে গেছে৷
জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ারের এক মুখপাত্র স্বীকার করেছেন যে এর্দোয়ানকে জার্মানি সফরের জন্য একটি আমন্ত্রণপত্র ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে৷ তবে বার্লিন এবং আংকারার তরফ থেকে সেই সফর এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি৷ এদনকি সফরের নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণও নিশ্চিত করেনি কোনো পক্ষ৷
তবে দিনক্ষণ কিংবা এর্দোয়ানের সফর ঠিক কী ধরনের হবে, সেটা নিয়ে নির্দিষ্ট তথ্য জানা না গেলেও জার্মানির রাজনীতিবিদরা এই বিষয়ে মন্তব্য করতে শুরু করেছেন৷ জার্মানির সবুজ দলের রাজনীতিবিদ চেম ও্যজদেমির মনে করেন, গণতন্ত্রের বিচারে এর্দোয়ান কোনো স্বাভাবিক প্রেসিডেন্ট নন৷ জার্মানির একটি পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘‘এর্দোয়ান নিষেধাজ্ঞা, স্বেচ্ছাতন্ত্র, স্বজনপোষণ এবং একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমে তুরস্ককে একরকম তুর্কমিনিস্তান বা আজারবাইজানে পরিণত করেছেন৷''
ফলেএর্দোয়ানকে কোনো ধরনের অভ্যর্থনা জানানোর আগে বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করেন ও্যজদেমির৷ তাঁর মতো একই সূরে মন্তব্য করেছেন উগ্র ডানপন্থি দল এএফডির সংসদীয় কমিটির প্রধান এলিস ভিডেল৷ তিনি বলেন, ‘‘এর্দোয়ানের উচিত নিজের দেশে থাকা৷ জার্মান সরকারের উচিত হবে না বার্লিনে তাঁকে আরেকটি ‘প্রোপাগান্ডা শো' করার সুযোগ দেয়া৷''
জার্মান সরকার অবশ্য সোমবার জানিয়েছে, এর্দোয়ানের সঙ্গে যেকোন ধরনের আলোচনায় অংশ নিতে আগ্রহী চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ বর্তমান জোট সরকারের শরিক রাজনীতিবিদরাও সফরের বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেছেন, ‘‘আমি কখনোই এই যুক্তিতে নিজেকে আস্বস্ত করতে পারিনি যে জটিল সঙ্গীদের সঙ্গে কোনো ধরনের কথাবার্তা না বলাই ভালো৷''
ম্যার্কেলের দল সিডিইউর রাজনীতিবিদ এলমার ব্রোক অতীতের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘‘আমরা এর আগেও বিতর্কিত অনেক রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে দিয়েছি৷ আমরা যদি শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে চাই, তাহলে জার্মানি শীঘ্রই একা হয়ে পড়বে৷''
উল্লেখ্য, তুরস্কে ২০১৬ সালে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়৷ এর্দোয়ান তখন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে তাঁর প্রকৃত এবং কাল্পনিক শত্রুদের উপর দমনপীড়ান চালান৷ সেসময় এক জার্মান সাংবাদিক এবং এক মানবাধিকার কর্মীকেও গ্রেপ্তার করা হয়৷ তুরস্কে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জার্মানি সোচ্চার হলে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে৷
রেবেকা স্টাইডেনমায়ার/এআই