জার্মানিতে নাচে-গানে শুরু হয়ে গেল ‘কার্নিভাল’
১১ নভেম্বর ২০১১রাইন নদীর তীর ঘেঁসা প্রধান তিনটি শহর – কোলন, ডুসেলডর্ফ আর মাইনৎস-এ এই ‘পঞ্চম' ঋতুর আগমন মানেই কার্নিভাল৷ আর কার্নিভাল মানেই নাচ-গান-পান৷ তার সঙ্গে আছে হৈহুল্লোড়, রংবেরং-এর পোশাক পরে নানা সাজ-সজ্জা, জম-জমাট সব সন্ধ্যা৷
তাই প্রতিবারের মতো এবারেও কার্নিভালের প্রথম এ দিনটায় কোলন শহরের প্রাচীন এলাকার ‘হয়মার্কট'-এ উপস্থিত হয় নানা বয়সের, নানা সাজের মানুষ৷ যাদের নানা রঙের এবং ঢঙের পোশাক পরে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়৷ দেখা যায় কার্নিভালে প্রচলিত গানের তালে তালে নাচতেও৷ কেউ খরগোশ, কেউ পরি, কেউ ডাক্তার, হরিণ, কেউ বা মৌমাছি৷ আবার কারো কারো পরনে আরো চমকপ্রদ পোশাক৷ এই যেমন ডাকাত বা ভূতের সাজ৷ সব মিলিয়ে আমোদ আর আনন্দের ঢালাও ব্যবস্থা৷
তবে শুধু কোলন নয়, ড্যুসেলডর্ফ আর মাইনৎস শহরেও ঐ একই সময় শুরু হয় কার্নিভালের এই আনন্দঘন ঋতু৷ আর এই মরশুমে ১১ই নভেম্বর থেকেই অসংখ্য ক্লাব ও সংস্থা নাচ, কমেডি শো এবং নানা স্বাদের অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে৷ কোলনে কার্নিভালের চূড়ান্ত পর্বে, মানে ফেব্রুয়ারি মাসের ‘রোজেন মোনটাগ' বা ‘গোলাপি সোমবার'-এ উপস্থিত হয় দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ৷ তাদের উপস্থিতিতে শহরের প্রধান প্রধান রাস্তায় চলে দীর্ঘ শোভাযাত্রা৷ অপেক্ষমান দর্শকদের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হয় চকলেট, লজেন্স, ফুল, সুগন্ধী ও আরো নানা রকমের উপহার৷ যা ব্যস্ত হাতে কুড়িয়ে নেয় ছেলে-বুড়ো-মেয়ে-পুরুষ সকলেই৷
অবশ্য শুধু রাস্তা-ঘাটই নয়, এ মরশুমে রাইন নদীর ধারের প্রায় প্রতিটি শহরের দোকানপাটই ভরে ওঠে নানা রকম পোশাক-আশাকে৷ ‘গোলাপি সোমবার'-এর তিন-চারদিন আগে থেকেই ভরা থাকে পানশালা, রেস্তোরাঁগুলো৷ নাচের আসরও বসে নানা জায়গায়৷ ঐ কটা দিন ট্রাম-বাসে যেন তিল ধারনের জায়গা থাকে না৷
প্রসঙ্গত, জার্মানিতে সেই ১৮২৩ সালে কার্নিভালের প্রথম শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল কোলনের বাসিন্দারা৷ এর দু'বছর পর ড্যুসেলডর্ফ শহরও শুরু করে এই আয়োজন৷ আর ১৮৩৬ সালে অন্যদের দেখাদেখি মাইনৎস শহরেও শুরু হয় এই উৎসব৷ আর এবার তা শুরু হলো শতাব্দীর এই বিশেষ দিনে৷
প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক