জার্মানিতে নিরাশ্রয়দের সংখ্যা বাড়ছে
৭ ডিসেম্বর ২০১৬২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে জার্মানিতে স্থায়ী বাসস্থান ছাড়া মানুষের সংখ্যা ২,৪৮,০০০ থেকে বেড়ে ৩,৩৫,০০০-এ দাঁড়িয়েছে৷ বিরোধী বামদলের একটি প্রশ্নের জবাবে জার্মান সরকার এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছেন৷
পরিসংখ্যানটি সরবরাহ করে নিরাশ্রয়দের সহায়তা সংক্রান্ত ফেডারাল সমিতি৷ পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ২০১৪ সালে যাদের নিজস্ব আবাস বলতে কিছু ছিল না, এমন মানুষদের মধ্যে ২,২০,০০০ ছিলেন পুরুষ ও ৮৬,০০০ মহিলা, এছাড়া ২৯,০০০ শিশু-কিশোরদের কোনো স্থায়ী বাসস্থান ছিল না৷ মজার কথা, ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল অবধি কিন্তু আশ্রয়হীনদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছিল৷
বামদলের সংসদীয় গোষ্ঠীর সভাপতি জাবিনে সিমারমান বলেন যে, আশ্রয়হীনদের সংখ্যা বৃদ্ধি জার্মানিতে দারিদ্র্য বৃদ্ধির কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে৷ শিশু-কিশোরদের মধ্যে আশ্রয়হীনতা বৃদ্ধিকে তিনি ‘‘বিশেষভাবে লজ্জাকর’’ বলে অভিহিত করেন৷
সিমারমান বলেন যে, কম ভাড়ার ফ্ল্যাটের ঘাটতি ও সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের রোজগার কমাই মানুষজনের ফ্ল্যাটে না থাকতে পারা অথবা ফ্ল্যাট থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার কারণ, বলে তিনি মনে করেন৷ কিন্তু বামদলের প্রশ্নের জবাবে শ্রম মন্ত্রণালয় এই মত প্রকাশ করে যে, কম ভাড়ার ফ্ল্যাট বাড়ি পাওয়া না যাওয়াই দৃশ্যত আশ্রয়হীনতার মূল কারণ নয়, বরং পারিবারিক সমস্যা, মাদকাসক্তি কিংবা অসুস্থতার কারণেই মানুষজন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন৷
নিরাশ্রয়দের সহায়তা সংক্রান্ত ফেডারাল সমিতি কিন্তু বামদলের মনোভাবই সমর্থন করেছে৷ তাদের মতে ভাড়া না দিতে পারা, ভাড়াটিয়াদের ফ্ল্যাট থেকে উৎখাত হওয়ার একটা বড় কারণ৷ এবং একবার ফ্ল্যাট থেকে উচ্ছেদ হবার পর আরেকটা সস্তার ফ্ল্যাট পাওয়া এই বাজারে সম্ভব নয়৷ সমিতির মতে এই প্রবণতা আরো চলবে এবং ২০১৮ সালের মধ্যে নিরাশ্রয়দের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়াতে পারে৷
তবে জার্মানিতে – অন্তত সরকারি পরিসংখ্যানে – নিরাশ্রয় বলতে শুধু যারা রাস্তাঘাটে, দোকান-বাজারের গেটে কিংবা ব্রিজের নীচে শীতের দিনেও কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকে, শুধু তাদেরই বোঝায় না৷ নিরাশ্রয় বলতে যাদের ভাড়াবাড়ি কিংবা অন্য কোনো ধরনের আবাস নেই, তাদেরও বোঝায় – যেমন যারা আশ্রয়হীনদের আবাসে, সস্তা বোর্ডিং হাউসে কিংবা বন্ধু-বান্ধবদের বাড়িতে থাকে, তাদেরও নিরাশ্রয়দের পরিসংখ্যানে ধরা হয়৷
এসি/ডিজি (ইপিডি, এএফপি)
প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে নীচে মন্তব্যের ঘরে লিখুন৷