জার্মানিতে বাক-স্বাধীনতা
৫ অক্টোবর ২০১৬মঙ্গলবার জার্মানির সরকারি জেডডিএফ টেলিভিশনের মহাসচিব টোমাস বেলুট জানিয়েছেন, ‘‘ব্যোমারমানের বিরুদ্ধে ‘এক রাষ্ট্রপ্রধানকে অবমাননার' অভিযোগ খারিজ করেছেন মাইনৎসের আইনজীবীরা৷ এটা প্রমাণ করে জার্মানির শিল্পীদের স্বাধীনতা৷ জার্মান শিল্পীদের জন্য এটা ভালো একটা খবর৷'' ব্যোমারমানের আইনজীবী ডানিয়েল ক্রাউসে বলেছেন, ‘‘আইনজীবীদের ওপর ভীষণ রাজনৈতিক চাপ ছিল৷ তারপরও তারা যে রায় দিয়েছেন তা আসলেই প্রশংসার যোগ্য৷''
ব্যোমারমান টুইটারে জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন, কেননা হামবুর্গের একটি আদালতে ঐ কবিতার ওপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত একটি মামলা এখনো চলছে৷ এর্দোয়ান ঐ কবিতার নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলাটি করেছিলেন৷
গত ৩১শে মার্চ সরকারি জেডডিএফ টেলিভিশনের লেট-নাইট ‘‘নিও ম্যাগাজিন রয়াল'' অনুষ্ঠানে ছড়াটি পাঠ করেন ইয়ান ব্যোমারমান৷ দৃশ্যত লক্ষ্য ছিল, এর্দোয়ানের আমলে তুরস্কে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা যেভাবে চাপের মুখে পড়েছে, সেই বিষয়টি নিয়ে ব্যঙ্গ করা৷ কিন্তু যে কারণেই হোক, ছড়ায় এর্দোয়ানের যৌন পছন্দ-অপছন্দকে পাশবিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা সে ছাগলদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কেই হোক আর ভেড়াদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কেই হোক৷
এই কবিতা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলে জেডডিএফ তাদের অনলাইন থেকে কবিতাটি সরিয়ে ফেলে৷ কিন্তু তার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায়৷ এপ্রিলে এর্দোয়ান ব্যক্তি হিসেবে একজন জার্মান উকিলের মাধ্যমে জার্মানির মাইনৎস শহরের আদালতে একটি মামলা দাখিল করেন৷ জার্মানির আইনের ১০৩ ধারায় মামলাটি করেন তিনি, যেখানে কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের অবমাননাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে৷ সেসময় জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছিলেন তিনি জার্মানিতে শিল্পীর স্বাধীনতাকে খুবই গুরুত্ব দেন৷
জার্মানির বিচার মন্ত্রণালয়ের কাছে এ রায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তারা কথা বলতে অস্বীকার করেন৷ জার্মানির সাংবাদিক ইউনিয়নও জানিয়েছে, এ রায়ের মাধ্যমে জার্মানিতে বাক স্বাধীনতার প্রতি সম্মানই প্রতিফলিত হয়েছে৷ এদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তুরস্কের উপ-প্রধানমন্ত্রী নুমান কুরতুলমুস জানিয়েছেন, কবিতাটি একেবারেই অশ্লীল এবং এটা কেবল প্রেসিডেন্টের একার অপমান নয়, ৭ কোটি ৮০ লাখ তুর্কির অপমান৷
এপিবি/এসিবি (এপি, ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি)